ক্রীড়ালেখক ও ব্যাংকার জাহাঙ্গীর আলমের অকাল মৃত্যুতে ব্যথিত প্রবাসী ক্রীড়ালেখক ফরহাদ টিটো। বুধবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন জাহাঙ্গীর। প্রয়াত এই ক্রীড়াপ্রেমীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্মৃতিচারণ করেছেন টিটো।
‘হুট করে মাত্র ৪১-এ চলে গেল জাহাঙ্গীর! মৃত্যুর হাতে বন্দি হয়ে গেল। খেলা নিয়ে লেখালেখি, চিন্তা আর দর্শনে অসামান্য প্রতিভা নিয়ে জন্মানো জাহাঙ্গীর কিছুটা দিলেও আরো অনেক কিছুই দিতে পারতো বাংলাদেশকে। এক সময় কয়েক বছর ক্রীড়া সাংবাদিকতা করেও হঠাৎ ছেড়ে দিয়ে পুরাদস্তুর ব্যাংকার হয়ে যাওয়া মানুষটা এই পেশার (ক্রীড়া সাংবাদিকতা /ক্রিকেট-ফুটবল পাণ্ডিত্য) অনেকের রাস্তা সহজ করে দিয়েছিলো এক, দুই বা তিন নাম্বার হতে। ইংরেজি বা বাংলা যেকোনো মাধ্যমের মিডিয়াতেই ক্রীড়া সাংবাদিকতা চালিয়ে গেলে আজকে জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশের সেরা তিন-চারজনের একজন থাকতো এই বিশ্বাস আমার থাকবে জীবনের শেষ নাগাদ।’
‘জাহাঙ্গীর আমার পাড়ার ছোট ভাই। ওকে জানি ওর জন্মলগ্ন থেকেই। মহল্লায় আমি ছিলাম ওর খুব প্রিয় বড় ভাই। পাড়ার ক্রিকেট টিমে সিনিয়র বা কখনো ক্যাপ্টেন আমি ওকে রাখতাম আমার দলে। ১৪/১৫ বছর বয়সেই দারুণ স্পিন করতো জাহাঙ্গীর। ক্রিকেট ছাড়াও যখন ফুটবল, ব্যাডমিন্টন বা হ্যান্ডবল খেলতে নামতাম… জোঁকের মতো লেগে থাকতো সে সিনিয়রদের পিছে। বয়সে অনেক ছোট বলে খেলায় না নিলেও সময় কাটাতো আমাদের সঙ্গে ঘুরঘুর করতো মাঠের চারপাশে।’
‘জাহাঙ্গীর যখন সাংবাদিক হয়, তখন আমি প্রবাসী । দীর্ঘ দুই যুগ ওর সঙ্গে কোনো যোগাযোগই ছিলো না আমার। বছর দেড়/দুই আগে আচমকাই ফেসবুকে পেয়ে যাই ওর ফ্রেন্ড রিকয়েস্ট। সেই থেকে আমার প্রায় সব লেখায় দারুণ বিচক্ষণ আর ব্যতিক্রমী সব কমেন্ট করতো। আমি মুগ্ধ হতাম তার সব মন্তব্য পড়ে, গর্বিত হতাম এই ভেবে যে এমন অমিত প্রতিভাবান মানুষটা আমাকে অনেক শ্রদ্ধা করে- আমাকে মন থেকে ভালোবাসে।’
‘‘জাহাঙ্গীর আমার কোনো স্ট্যাটাসে শেষ কমেন্টটা করেছিলো জুলাই মাসের ৯ তারিখে। ক্রিকেটার এনামুল হক মনির বিশাল এক ছক্কা নিয়ে আমার `স্মৃতিবেদনে’। তারপর আর কোনো সাড়াশব্দ নেই । ওকে আর পাচ্ছিলামই না ফেসবুকে। আজ এতদিন পর যখন পেলাম তখন সে নিজেই স্ট্যাটাস হয়ে গেছে নিজের আইডিতে। ‘’
‘এই জাহাঙ্গীর আর লিখবে না কোনোদিন…ফুটবল, ক্রিকেট নিয়ে অসাধারণ সব ব্যাখ্যাও দিবে না কোনোদিন ! শুধু বেদনার্ত স্মৃতি হয়ে থাকবে আমার মতো কিছু মানুষের মনে।’