চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

স্থবির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর ওই পদটি শূন্য থাকায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়েছে। তবে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক বলছেন, বিচার কাজে ধীর গতি এসেছে।

মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার ধানমন্ডি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আজকের ৫৩তম তদন্ত প্রতিবেদনসহ এখন প্রসিকিউশনের কাছে ৫টি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে জমে থাকা মামলার সংখ্যা ২০ টিরও বেশি। মনে রাখা উচিৎ এসব মামলা ১৯৭১ এ সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা। পুরনো এইসব অপরাধের সাক্ষীসহ নানা প্রতিকূলতা তো আছেই। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার জন্য সাক্ষীদের হাজির করা সমস্যা হয়ে দেখা দেয়।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের মৃত্যুর পর ওই পদে কোনো নিয়োগ না হওয়ায় বিচার কাজে স্থবিরতা এসেছে বলে জানান তদন্ত সংস্থাটির এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

গত ১৩ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক। তিনি ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন।

সানাউল হক বলেন, ‘চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর থেকে কিছুটা ধীর গতি চলছে। এই সময়ে ১০ জনের মতো সাক্ষীকে ঢাকায় নিয়ে এসেও আবার তাদের গ্রামে ফেরত পাঠাতে হয়েছে।’

এরকম ধীর গতি কাটাতে দ্রুত চেয়ারম্যানের শূন্যপদে নিয়োগ হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি। তার মতে কেবল একটি ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারিক প্রক্রিয়াকে দ্রুত সম্পন্ন করতে যথেষ্ট নয়।

সানাউল হক আরো বলেন, ‘আবারও দুটি ট্রাইব্যুনাল করে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় গতি ফিরিয়ে আনা উচিৎ। এটা কেবল আমি বলছি না। এটা ৭১ এ স্বজন হারানো বিচার প্রত্যাশী মানুষদের দাবি। তদন্ত করতে আমরা যেহেতু মাঠ পর্যায়ে তাদের কাছে যাই তাই আমাদের কাছেই তারা ক্ষোভ-হতাশা প্রকাশ করে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির যে সংকটে ন্যায় বিচার আটকে থাকে সেই সংস্কৃতি দূর হোক এটাই চাই।’

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি ও এদেশীয় সহযোগীদের করা মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারের জন্য ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। এর দুই বছর পর ২০১২ সালের ২২ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করা হয়।

ইতোমধ্যে দুই ট্রাইব্যুনালে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৫ সালে এসে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ পুনর্গঠন করা হয়। একইসঙ্গে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচার কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।