এক আফগান নারীর দুই কান কেটে দিয়েছে তার স্বামী। বর্বর এই পারিবারিক সহিংসতার ঘটনাটি ঘটে দেশটির উত্তরের প্রদেশ বাল্খে। স্ত্রী জরিনার (২৩) অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও তীব্র মানসিক আতঙ্কে ভুগছেন তিনি।
নৃশংস কায়দায় হামলাকারী স্বামীকে এখনও আটক করতে পারে নি পুলিশ। এই বর্ববরতা সংঘটনের পর কাশিন্দা জেলাতেই তিনি পালিয়ে রয়েছেন বলে জানা যায়।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে দাম্পত্য জীবন শুরু করা জরিনার সাথে স্বামীর সম্পর্ক ‘কখনোই ভালো ছিলোনা’। ‘হঠাৎ করে তাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে’ হাত-পা বেঁধে এই বর্বর কাণ্ডটি ঘটান তার স্বামী।
বিনা উস্কানিতে এমন হামলা কেনো জানেন না জরিনা। তিনি বলেন, আমি কোন পাপ করিনি। জানিনা আমার স্বামী কেন এমনটি করলো? স্বামীর গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান জরিনা।
জরিনা জানান, স্বামী খুবই সন্দেহপ্রবণ ছিলো এবং তার (জরিনা) মা-বাবাকে দেখাশোনার ব্যাপারে বাধা দিতো। পরিবারের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি প্রায়ই অপরিচিত কারোও সাথে কথা বলার জন্য আমাকে দোষারোপ করতো।
আফগানিস্তানে পারিবারিক এমন নৃশংসতা কিন্তু প্রায়ই ঘটে। গত বছরের জানুয়ারিতে দেশটিতে রেজা গুল নামক নারীর নাক কেঁটে দেয় তার স্বামী। নভেম্বর, ২০১৫-তে ব্যাভিচারের অভিযোগে এক নারীকে পাথর ছুড়ে হত্যা করা হয়। সেই বছরেরই মার্চে পবিত্র কোরান শরীফ পুড়ানোর মিথ্যা অভিযোগে কাবুলের তরুণী ফারখুন্দাকে গণপিটুনিতে এবং পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়াও ২০১৪ এর সেপ্টেম্বরেও দায়কুন্দি প্রদেশে স্ত্রীর নাক কেটে দেয় এক স্বামী। ২০১০-এ পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে অষ্টাদশী আয়েশার নাক ও কান কেটে দেয় তার স্বামী. যা টাইম ম্যাগাজিনের ফ্রন্ট কাভারে স্থান পায়।
পারিবারিক সহিংসতার হাত থেকে নারী-শিশুদের রক্ষায় আফগান সরকার বারবার আইন করার উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছেনা। গতবারের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই যেমন সংসদের উভয় কক্ষেই অনুমোদনের পরও এই সংক্রান্ত আইনে সাক্ষর করেননি। ২০১৪ সালে তিনি খসড়া আইনে পরিবর্তনের নির্দেশ দেন- যা আক্রান্তদের ন্যায় বিচার পাওয়া গুরুতর ভাবে সীমিত করবে অভিযোগ সমালোচকদের। এছাড়াও তার উত্তরসূরি বর্তমান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানিও সহিংসতা ও হয়রানি থেকে নারী ও শিশুদের রক্ষায় প্রণিত খসড়া আইনে সংসদের নিম্নকক্ষে নভেম্বরে ও উচ্চকক্ষে ডিসেম্বরে পাশ হওয়া সত্যেও এখনও সম্মতি জানাননি।