চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সিলেটের জঙ্গি অাস্তানায় প্যারা-কমান্ডোদের অভিযান

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে শুরু করে ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় অবরুদ্ধ করে রাখা সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ির  ‘আতিয়া মহলে’ অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো ব্যাটালিয়ন।

শনিবার সকাল ৯ টার  পর ‘অপারেশন ‘টোয়াইলাইট’ সাংকেতিক নাম দিয়ে ওই অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের প্যারা-কমান্ডো ফোর্স। এর আগে ওই বাড়ির এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান করা সাধারণ মানুষ ও সংবাদকর্মীকে সরিয়ে দেয়া হয়। সেখানকার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়।

অভিযান শুরুর আগে সেখানে আনা হয় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, পুলিশের সাঁজোয়া যান ও  কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স।

শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে ওই বাড়ি ঘিরে অবস্থান নেয় পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াট ও সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য। ঘটনাস্থলে বিকেলে আনা দুটি অ্যাম্বুলেন্স সন্ধ্যার দিকে ফিরে গেলেও রাত ৯টার দিকে আবার ঘটনাস্থলে আসে।

মধ্যরাতের পর কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সেখানে পৌঁছান।

পুলিশের ধারণা, ভেতরে জঙ্গিদের কাছে বিস্ফোরক থাকতে পারে। এছাড়া ভবনের ২৮ পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবেও চূড়ান্ত অভিযানে দেরী করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ নাগরিকের প্রাণের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করেই এগুচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

ভেতরে জঙ্গিদের মধ্যে মর্জিনা নামের এক নারী রয়েছেন। আর তার সঙ্গে আরও একাধিক পুরুষ জঙ্গি রয়েছেন বলে ধারণা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। ফ্রিজের কমপ্রেসর ব্যবহার করে শক্তিশালী বোমা তৈরি করে রাখতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এ অভিযানে অংশ নেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

শুক্রবার বিকেলে ঢাকা থেকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় পৌঁছান পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াট সদস্যরা। এর আগে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে ‘আতিয়া মহল’ নামের পাঁচতলা বাড়িটি ঘিরে রাখে পুলিশ। বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে ধারণা পুলিশের।

শুক্রবার বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ১০ বারের বেশি পুলিশের ফাঁকা গুলির শব্দ শোনা গেছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বারবার আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হলে প্রথমে জঙ্গিরা সোয়াট আসলে আত্মসমর্পণের কথা বললেও পরবর্তীতে আর সাড়া দেয় নি।

ঢাকা-চট্টগ্রামের ওই অভিযানের পর আটক জঙ্গিদের দেওয়া তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শিববাড়ি এলাকার পাঁচতলা বাড়িটি ঘিরে রাখেন সিলেটের স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা।

এরপর ওই বাড়ির মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেন তারা। শুক্রবার ভোরে ভেতরে থাকা জঙ্গিরা গ্রেনেড চার্জ করে বলে স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়। পুলিশও কয়েক দফা গুলি ছোড়ে।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার পাঠানপাড়া সড়কের পাশে অবস্থিত পাঁচতলা ও চারতলাবিশিষ্ট দুটি ভবনের নাম আতিয়া মহল। সিলেট নগরীর আতিয়া ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ির বান্দরঘাটের (বন্দরঘাট) বাসিন্দা উস্তার মিয়া।

গত জানুয়ারি মাসে প্রাণ কোম্পানির অডিট অফিসার পরিচয়ে কাওসার আহমদ ও মর্জিনা বেগম ওই বাড়ি ভাড়া নেন বলে জানিয়েছেন বাড়ির মালিক।