এ বছর অনেকগুলো দলীয় এবং নীতি-নির্ধারণী সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্টত উল্লেখ করেছেন আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হোক এটিই তিনি চান। সর্বশেষ গত ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা কমিটির সভায় এই একই বক্তব্য তুলে ধরেন। ওই সভায় তিনি আরও বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্যে কোন কোন পদক্ষেপ গ্রহণযোগ্য সেসব বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা হবে। গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’
কার্যনির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এই বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা যদি তার বক্তব্যের ভেতরটা অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ করি তাহলে বুঝা যায়, সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বর্তমান সরকার যেভাবে ক্ষমতাসীন হয়ে আছেন সেখানে প্রধানমন্ত্রীর নিজেরও ঢের অসন্তুষ্টি রয়েছে। এ কারণেই তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হোক এটি তিনিও কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খুবই প্রশংসনীয় এবং ইতিবাচক যা জনগণের মাঝে সামগ্রিকভাবে এক ধরনের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা দৃঢ় করছে।
নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্যে দিয়ে সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার এবং তাদের মিত্রদের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ নয়-এই যুক্তি তুলে ধরে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর বৃহৎ অংশ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেছিল। শুধু বিএনপি এবং তাদের মিত্রই নয়, বাম ঘরানার সিপিবি, বাসদসহ বেশিরভাগ দলগুলোও দলীয় সরকারের অধীনে ৫ জানুয়ারির কথিত জাতীয় নির্বাচন বর্জন করেছিল নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। এই নির্বাচন ঘিরে মারাত্বক সহিংস অবস্থা তৈরি হয়েছিল। নির্বাচন বর্জনকারীদের ডাকা অবরোধ, অপকর্ম আর ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা পোক্ত করার জটিল আবর্ত তৈরি হওয়ায় দেশের সম্পদ যেমন নষ্ট হয়েছিল তেমনি অজস্র সাধারণ মানুষের প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছিল। সহিংস ঘটনার মধ্যে দিয়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু সব দলের অংশগ্রহণ না থাকায় নির্বাচনে উৎসবের বদলে ছিল উৎকণ্ঠা, সংশয়, নিপীড়ন-নির্যাতন। এই নির্বাচনকে প্রতিহতের কথা বলে বিএনপি এবং জামায়াত শিবির চক্র সাধারণ মানুষকে হত্যার উৎসবে মত্ত হয়েছিল। শত শত মানুষকে পুড়িয়ে মারার দায় থেকে তারা কোনোদিনই মুক্তি পাবে বলে মনে হয় না।
সবকিছু ঠিকটাক থাকলে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবরের পর শুরু হবে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা। স্বভাবতই আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিকে এখন সবারই চোখ নিবদ্ধ। যদিও নির্বাচন বেশ দূরে তথাপি বেশ কয়েকটি সঙ্গত কারণে নির্বাচনের ভবিষ্যত গতিপথ নিয়ে চারিদিকে নানান আলোচনা আশাবাদ জোরালো হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন প্রেক্ষিত ও বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও আগামী নির্বাচন কেমন হবে তা গভীরভাবে অনুধাবনের চেষ্টা করছেন। সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন হবে কি না, সবাই ভোট দিতে পারবেন কি না-এ প্রশ্নগুলোও এখন সামনে চলে এসেছে। তবে জনমনে যে আশা উঁকি দিচ্ছে সেটা হলো-সবার অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। যে নির্বাচন ভবিষ্যত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা তৈরিতে বড় ভূমিকা রাখবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেও সেটি প্রতিধ্বণিত হচ্ছে। বর্তমানে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল সেখানেও সবার অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বপ্নটিই উদ্ভাসিত হয়েছে।
এ বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কর্তৃক সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বাকি সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদত হোসেন চৌধুরী। সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত ১০টি নাম থেকেই রাষ্ট্রপতি এই পাঁচ জনকে নিয়োগ প্রদান করেন। নিয়োগ প্রাপ্তির পর সিইসির পক্ষ থেকে একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়। সেই রোডম্যাপকে ধরেই নির্বাচন কমিশন তার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। শপথ নেওয়ার পর নির্বাচন কমিশন তথা ইসির পক্ষ থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অঙ্গীকার নিয়ে মোট সাতটি করণীয় বিষয় শনাক্ত করা হয়। সাতটি করণীয় হলো- আইনি কাঠামোসমূহ পর্যালোচনা ও সংস্কার, কর্ম পরিকল্পনার ওপর পরামর্শ গ্রহণ, সংসদীয় এলাকার নির্বাচনী সীমানা পুনঃনির্ধারণ, জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুতকরণ করণ এবং বিতরণ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা এবং নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সকলের সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ। এখন পর্যন্ত ইসি তার রোডম্যাপ বা পথরেখা ধরেই সামনের দিকে এগুচ্ছে।
৩১ জুলাই থেকে ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপ শুরু করে। প্রথমে তারা সুশীল সমাজ এবং এরপর গণমাধ্যম কর্মী ও প্রধান প্রধান মিডিয়ার সম্পাদকদের সাথে সংলাপ করে। আগষ্টে শুরু হয় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে প্রথম সংলাপ। এ পর্যায়ে ২৪ আগস্ট বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট নামে একটি রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপের মধ্যে দিয়ে ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী সংলাপ শুরু হয়। ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, এলডিপিসহ চল্লিশটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সাথে আনুষ্ঠানিক সংলাপ করেছেন। সংলাপে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলো আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের ভাবনা, পর্যবেক্ষণ এবং প্রস্তাবনা দিয়ে এসেছে। ৪০টি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মোট ৫৩১টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির সাথে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয় ১৫ অক্টোবর। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীরের নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশগ্রহণ করে। বিএনপির প্রতিনিধি দল দলের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে ২০ দফায় তাদের প্রস্তাব তুলে ধরে। প্রস্তাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নির্বাচনের জন্য সহায়ক সরকার নিশ্চিত করতে হবে, ভোটের আগে অবশ্যই সংসদ ভেঙে দিতে হবে, বিরোধী দলের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা আছে তা প্রত্যাহার করতে হবে, গুম খুন হয়রানি বন্ধ করতে হবে, ই-ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার করা যাবে না, সব রাজনৈতিক দলকে এখন থেকে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে, সব দলের জন্য এখন থেকে সমান সুযোগ ( লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) তৈরি করতে হবে, প্রতিরক্ষা বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনের অন্তত সাত দিন আগে থেকে মোতায়েন করতে হবে, সিইসি এককভাবে সিদ্ধান্ত নিলে হবে না পুরো ইসি বসে সিদ্ধান্ত নেবে এবং ৫৭ ধারা বাতিল করতে হবে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের ২১ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের সাথে সংলাপে যে ১১ দফা তুলে ধরে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নির্বাচনে অবৈধ অর্থ ও পেশিশক্তির ব্যবহার রোধে সংবিধানে বর্ণিত নির্বাচন সংক্রান্ত নির্দেশনা ও বর্তমান নির্বাচনী আইন ও বিধিমালা কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচন করা, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত এবং নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার অপেশাদার ও দায়িত্বহীন আচরণের জন্য সংশ্লি ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, নির্বাচন পরিচালনায় কেবল প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বশীল কর্মচারীদের মধ্য থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগ, নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও সতর্কতা অবলম্বন, নির্বাচনের দিন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ সব গণমাধ্যমকর্মীর নির্বাচনী বিধি-বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে দায়িত্ব পালনের জন্য কার্যকর নির্দেশনা, গণমাধ্যমকর্মীদের উপযুক্ত পরিচয়পত্র প্রদান ও তাদের দায়িত্ব, কর্ম এলাকা নির্ধারণ করা, দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের ভোটের তিন দিন আগে এনআইডি ও ছবিসহ তালিকা দেওয়া এবং প্রিসাইডিং অফিসার কর্তৃক তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে ভোটকক্ষে প্রবেশ ও নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করা, নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা করা, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন এবং ইসি নির্ধারিত নির্বাচন-পরবর্তী সময়ের জন্য প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর ওপর ন্যস্ত থাকবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে কোন পরিস্থিতিতে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা যাবে তা ১৮৯৮ সালের প্রণীত ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৯ থেকে ১৩১ ধারায় এবং সেনা বিধিমালা ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ শিরোনামে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে রাজনৈতিক সংলাপ হলেও নির্বাচনটা কীভাবে হবে তার কোনো রুপরেখা এখনও পরিস্কার নয়। তবে এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে যে সব কর্মকান্ড চলমান রয়েছে সেগুলোকে সুশীল সমাজসহ সবাই স্বাগতই জানাচ্ছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ধারাবাহিক সংলাপ অনুষ্ঠানের দিকেও রাজনৈতিক বিশ্লেষক, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, বিভিন্ন পেশাজীবী, গণমাধ্যম কর্মী এবং আমজনতাও এক ধরনের নজরদারি রেখেছেন। এই নজরদারির কারণটাও হলো-আগামী নির্বাচনের জন্যে কী ধরনের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে সেটার পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণ এবং অবলোকন। এর আগে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করেন সিইসি। সেখানেও রাষ্ট্রদূতেরা সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে মতামত পেশ করেন।
বিশেষ করে ১ জুন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট সিইসির সাথে বৈঠকে বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী, এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করতে চায়।’ বার্নিকাট প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) চান আগামী নির্বাচন যেনো কোনো প্রকার প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। তবে সেটি করার জন্য শুধু সবার অংশগ্রহণই যথেষ্ট নয়, আগামী নির্বাচনে যাতে প্রার্থীরা সুষ্ঠুভাবে প্রচারণা চালাতে পারেন, ভোটাররা যাতে ভোট প্রয়োগ করতে পারেন এমনকি ভোট গণনা যেন স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’ মনে আছে সেদিন সিইসি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে ভোটে সহিংসতা থাকবে না। সবাইকে নিয়ে ভোট করতে উদ্যোগ রয়েছে কমিশনের।আসলে সবাইকে নিয়েই একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এমনটিই এখন জনগণের আশা আকাঙ্খার মূল বিষয়বস্তু। সেই আকাঙ্খাটাই এখন জনগণের মাঝে প্রবল আকার ধারণ করেছে। সর্বশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা সার্ভিসকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারের দিকে দৃষ্টি দেই। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমরা যে কাজ করেছি, তাতে জনগণ খুশি হয়ে ভোট দেবে, না হলে না দেবে। যা দেবে তাই আমরা মেনে নেব। নির্বাচন কমিশন এখন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। নির্বাচন অবশ্যই অবাধ নিরপেক্ষ হবে। নির্বাচনের দায়িত্বে থাকবে নির্বাচন কমিশন। তারাই সব করবে।’ প্রধানমন্ত্রীর এই উপলব্ধি যদি সত্যিই বাস্তবায়িত হয় তাহলে নিশ্চিত দেশ গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাবে। জনগণের ভোটাধিকারই পারে দেশের সব মানুষের মাঝে বিশ্বাস ও আস্থা তৈরি করতে। বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার সব দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারলে ইতিহাসে তিনিও অমর হয়ে থাকবেন।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)