চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সাত খুনের রায় ন্যায় বিচারের নতুন দৃষ্টান্ত: প্রধান বিচারপতি

সাত খুনের অপরাধে আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেশে ন্যায় বিচারের নতুন দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, এই বিচারে সুপ্রিম কোর্টের সময়োপযোগী হস্তক্ষেপের ফলে অপরাধীদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হয়। স্বল্পতম সময়ে বিচার নিষ্পত্তি হওয়ায় বিচার বিভাগের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা বেড়েছে।

প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছর পূর্তিতে দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশের ২১ তম প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘অপরাধী যত বড় হোক না কেনো সে দায়মুক্তি পাবে না। চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলার প্রভাবশালী আসামী র‌্যাবের কতিপয় কর্মকর্তা with attitude of impunity বা দায়মুক্তি পেয়ে যাবে ভেবে লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড ঘটায়। যা সমগ্র জাতিকে স্তম্ভিত করে।

“সুপ্রিম কোর্টের সময়োপযোগী হস্তক্ষেপের ফলে অপরাধীদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা হয়। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে উক্ত মামলার বিচার নিষ্পত্তি করায় দেশের আপামর জনগণের আস্থা বিচার বিভাগের প্রতি আরও বেড়েছে।”

দেশের বিচার বিভাগকে সেবা প্রদানের মাধ্যমে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে গড়ে তোলার আশা প্রকাশ করে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘বিচারকরা আরও বেশি সংবেদনশীল ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ক্রমশ বাড়বে। বাংলাদেশের বিচারবিভাগ এশিয়ার একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হবে।’

সোমবার ৭ খুনের ঘটনায় দু’টি মামলায় প্রধান আসামি নূর হোসেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (বরখাস্ত) তারেক সাঈদ, মেজর (বরখাস্ত) আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (বরখাস্ত) এম এম রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং যাবজ্জীবনসহ ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

বর্তমানে নূর হোসেন এবং তারেক সাঈদকে কাসিমপুর কারাগার ১-এ আলাদা আলাদা কনডেম সেলে রাখা হয়েছে।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বিকেলে অপহৃত হয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জন। তিন দিন পর তাদের মরদেহ পাওয়া যায় শীতলক্ষ্যা নদীর শান্তির চর এলাকায়।

সাত খুন মামলার সাজাপ্রাপ্ত র‍্যাব সদস্যদের মধ্যে ১৭ জন কারাগারে আছে। চাকরিচ্যুত তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন ও এম এম রানা ছাড়া অন্যরা হচ্ছে: হাবিলদার এমদাদুল হক, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দ বালা, করপোরাল রুহুল আমিন, এএসআই বজলুর রহমান, হাবিলদার নাসির উদ্দিন, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, সৈনিক নুরুজ্জামান, কনস্টেবল বাবুল হাসান ও সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর। তারা সবাই নিজ নিজ বাহিনী থেকে চাকুরিচ্যুত।

আর পলাতক আটজন হচ্ছে: করপোরাল মোখলেছুর রহমান, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবীর, এএসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল হাবিবুর রহমান। এরাও সবাই চাকুরি থেকে বরখাস্ত হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ২৬ জনের মধ্যে ১৬ জন সাবেক র‌্যাব সদস্য।