চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ষোড়শ সংশোধনী: রিভিউ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত রাষ্ট্রপক্ষ

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ হিসেবে ‘রিভিউ’ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত রয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের নেতৃত্বে ১০ জনের একটি টিম রিভিউ প্রস্তুতি সংক্রান্ত কাজে সম্পৃক্ত রয়েছেন।

এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, অনেক বড় রায়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা রিভিউ প্রস্তুতি নিচ্ছি। আদালতের দৈনন্দিন কাজ শেষ করে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত প্রায় ৯টা ১০টা পর্যন্ত আমরা  কাজ করছি।

‘আমিসহ ১০ জন আইন কর্মকর্তা এই কাজে যুক্ত রয়েছি। অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের লাইব্রেরীতে বসে আইনি তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ সহ এ সংক্রান্ত কাজগুলা এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের সিদ্ধান্ত এলেই যথাসময়ে  রিভিউ  করা হবে।’

এর আগে ১২ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, ‘আমরা রায়ের সার্টিফাইড কপি (সত্যায়িত অনুলিপি) পেয়েছি।’ আইন অনুযায়ী, রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়া একমাসের মধ্যে  রিভিউ  করতে হয়।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করা হয়। ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশ হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে একটি রিট করেন।

ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এরপর হাইকোর্টের দেয়া ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। গত ৮ মে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের উপর শুনানি শুরু হয়।

গত ৩ জুলাই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন। আপিল খারিজের ওই রায়ের ফলে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ই বহাল থাকে।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ১ অাগস্ট ৭৯৯ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত রায় অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের সুপারিশ করার ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ফিরে যায়।

এছাড়া রায়ের পর্যবেক্ষণে, গণতন্ত্র, রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, সুশাসন, দুর্নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে।