চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

শুধু মদ খেয়ে ড্রাইভিংই নিষিদ্ধ নয়, বাংলাদেশে মদ খাওয়াই নিষিদ্ধ

বাংলাদেশে অন্য মাদকদ্রব্যের মতো মদ্যপানও নিষিদ্ধ। তাই মদ খাওয়া প্রথম অপরাধ হলে মদ খেয়ে গাড়ি চালানো আরো একটি অপরাধ। এই অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যে আইন তাতে অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ডের কথা বলা আছে।

পুলিশের এডিশনাল এসপি মোহাম্মদ হেলালউদ্দীন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, বাংলাদেশে মাদক ও মদ নিষিদ্ধ, আর মাদক গ্রহণ করে বা মদ খেয়ে ড্রাইভিং করা আরো বেশি নিষিদ্ধ।

তিনি বলেন: দেশে মদ খাওয়া একটা অবৈধ কাজ। ওই অবৈধ কাজ করে অর্থা‍ৎ মদ খেয়ে গাড়ি চালালে প্রসিকিউশনে মামলা হবে। যদি সে এ অবস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়ে কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটায় তাহলে তার বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনে মামলা হবে।

একই কথা বললেন আরেক এডিশনাল এসপি মোনালিসা বেগম।

চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, মদ খেয়ে বা মাদক সেবন করার পর ড্রাইভিং পুরোপুরি নিষিদ্ধ। মাদক সেবন করে ড্রাইভিং করলে ট্রাফিক আইনে মামলা হবে, সঙ্গে তাকে জরিমানাও করা হবে। আর এভাবে গাড়ি চালাতে গিয়ে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে নিয়মিত মামলা হবে।

আইনের এসব জায়গা আরো পরিস্কার করলেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শাহ মোহাম্মদ আরিফুর রহমান।

তিনি জানান, মাতাল অবস্থায় কেউ গাড়ি চালালে মোটর যান আইনের ১৪৪ ধারায় তিন মাসের কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। একই ঘটনা দ্বিতীয়বার ঘটালে তার দুই বছর কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা হবে। এসবের সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তার লাইসেন্সও স্থগিত করা হবে।

ইন্সপেক্টর শাহ মোহাম্মদ আরিফুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর সময় কোন দুর্ঘটনা ঘটিয়ে কাউকে গুরুতর আহত করলে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৩৮ এর (ক) ধারা মতে মামলা করা হবে, যেখানে অভিযুক্ত সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন অথবা উভয় দণ্ডে হবেন।

‘এই দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ২৭৯ ও ৩০৪ (খ) ধারামতে মামলা রুজু হবে। যেখানে অভিযুক্ত সর্বোচ্চ তিন বছরের সাজা ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’

খন্দকার রাকিবুর রহমান

বাংলাদেশে মদপান নিষিদ্ধ হলেও কারো স্বাস্থ্যগত কারণে মদ প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তাকে পারমিট (অনুমতিপত্র) দেয়।

তবে, সেটাকে ব্যতিক্রম ধরে বাংলাদেশে মদ নিষিদ্ধ বলে জানিয়েছেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান।

তিনি বললেন, অবৈধভাবে মদ খাওয়া অপরাধ। আর মদ খেয়ে বা মাদক গ্রহণ করে গাড়ি চালানো আরো একটি অপরাধ।

‘অপরাধ করলে শাস্তি তাকে পেতেই হবে।’

আইনে উল্লেখিত বিভিন্ন ধারার কথা উল্লেখ করে চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, কেউ অবৈধভাবে মদ খেয়ে গাড়ি চালালে শাস্তি ভোগ করবেন। আর তখন গাড়ি চালিয়ে কাউকে আহত বা ‘নিহত’ করলে তিনি আরো বড় অপরাধ করেন। ফলে সেখানেও তিনি কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হবেন।

তবে প্রতিবছর বাংলাদেশীরা ঠিক কী পরিমাণ মদ গ্রহণ করেন সে বিষয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাছে কোন তথ্য নেই।

স্থানীয়ভাবে কেরু কোম্পানি মদ উৎপাদন করলেও আমদানিও করা হয় অনেক। বৈধ আমদানি মূলতঃ কূটনীতিক এবং অন্য বিদেশীদের জন্য। এর বাইরে চোরাচালান হয়ে আসে বিপুল পরিমাণ মদ ও মাদক।