চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

শীতের রাতে উষ্ণতা ছড়ালেন জেমস

‘একজন কণ্ঠশিল্পীর বয়স হয়, আর তার ভোকাল ডাউন হতে থাকে। সুরে, কণ্ঠে এক ধরনের বার্ধক্য বিরাজ করে। আর এই মানুষটার বয়স হচ্ছে, আর তিনি যেনো গান দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়েই যাচ্ছেন’। গানে বিমুগ্ধ এক কবি মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে ‘নগর বাউল’ খ্যাত জেমসের গান শুনে কথায় কথায় এমনটিই বলছিলেন।

হ্যাঁ। সত্যি সত্যিই যেন দিনকে দিন নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন ‘গুরু’ খ্যাত তারকা শিল্পী জেমস। বিশেষ করে অপেন স্টেজে লাইভ অনুষ্ঠানগুলোতে জেমস এখনো তুলনাহীন। তার নামে এখনো অজস্র তরুণ যুবা নিজেদের হারিয়ে ফেলেন। গানের জেমস যেন এক মুগ্ধতার নাম। আর এই মুগ্ধতার স্পর্শ নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন হাজারো তরুণ তরুণী।

ঢাবি মাতালেন জেমস‘সবার জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট’-এই প্রতিপাদ্য নিয়ে প্রথমবারের মতো উদযাপিত হতে হয়েছে ‘জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিবস ২০১৭’। দিনব্যাপী রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ছিল চমকপ্রদ সব আয়োজন। আর এদিন এই আয়োজনের অংশ হিসেবে বিকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় একটি বিশেষ কনসার্ট। যেখানে আগে থেকেই জানিয়ে দেয়া হয়, এখানে গাইবেন জেমস!

এমন ঘোষণায় জেমসের গান শুনতে বিকাল থেকেই তরুণ তরুণীরা উপস্থিত হন সুবিশাল মল চত্বরে। সন্ধ্যা গড়িয়ে ঘড়িতে তখন রাত আটটা। এদিকে শীতের প্রকোপও কম নয়। কুয়াশা পড়ছে বিকাল থেকেই। আলস্য ভঙ্গিতে চা ফুকতে ফুকতে যখন কিছুটা উষ্ণতা খুঁজছেন তরুণ-তরুণীরা, তখনই ঘোষণা হল এবার মঞ্চে উঠছেন জেমস!

চারদিকে হই হুল্লোড় তখন। তুমুল কড়তালি। এবং নগর বাউলের উপর ভর করে মল চত্বরে উষ্ণতা! নড়ে চড়ে উঠলেন তরুণ যুবারা। এদিকে মঞ্চে উঠেই দুষ্টু ছেলে মেয়েদের উস্কে দিলেন জেমস। গান ধরলেন ‘দুষ্টু ছেলের দল, ছন্ন ছাড়ার দল’! উপস্থিত দর্শক শ্রোতারা সুর মেলালেন নগর বাউলের সঙ্গে। তরুণ তরুণীরা তার কথায় তালিতে তালিতে মুহূর্তেই ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয় অঞ্চল যেন কাঁপিয়ে তুললেন।

এরপর একে একে গাইলেন বিজলী চলে যেওনা, মীরা বাঈ, আসবার কালে আসলাম একার মতো দর্শক মাতানো গান। এই গানগুলোর বেশীর ভাগই গেয়েছে দর্শক। সুরে কণ্ঠে জেমসের সঙ্গে একাত্বতায় মিশে গেছে সকলে। দল বেধে গ্রুপ করে করে তুমুল নাচতেও দেখা গেছে বেশকিছু তরুণ তরুণীকে। শুধু এই গানগুলো নয়, গুরু ঘর বানাইলা কি দিয়া এবং দশ মাস দশদিন গর্ভে ধারণ-এই গানগুলোর সঙ্গেও দর্শকের একাত্বতা বিশেষ নজর কেড়েছে। গায়কী আর মিউজিকের বৈচিত্র ভাবটাও জেমসের মধ্যে খেয়াল করেছেন অনেকে। বিশেষ করে মা গানটার অসাধার গায়কী ছিলো অভিনব।

ঢাবি মাতালেন জেমসঘড়িতে তখন প্রায় সাড়ে নয়টা। টানা এক ঘন্টার মত গাইলেন জেমস। তবু মন ভরছে না দর্শকদের। জানিয়ে দেয়া হল এটাই জেমসের শেষ গান। শ্রোতা দর্শকের চিৎকার করে অনুরোধ, যেন আরো অন্তত একটি গান পরিবশেন করেন জেমস। এমনিতেই মল চত্বরে প্রচুর গাছ থাকায় হিম শীতল একটা পরিবেশ, তার উপর জেমসের গান থেমে যাওয়ায় যেন ঝেঁকে শীতের হাওয়া। আর এমন সময় ফের দর্শকের অনুরোধে জেমস গেয়ে উঠেন ‘পাগলা হাওয়া’। সবার মাঝে ফের উষ্ণতা ছড়িয়ে যায়। আর এই উষ্ণতা নিয়ে ঘরে ফেরে তরুণ তরুণীর দল। তার আগে জেমস সবার উদ্দেশ্যে বলে যান, বেঁচে থাকলে আবার দেখা হবে!