বর্বরতার বিরুদ্ধে রং আর তুলি নিয়ে নেমেছেন প্রতিবাদী শিল্পীরা। চিত্রকর্মের মধ্যদিয়ে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর চলা সহিংসতা বন্ধে বিশ্ব বিবেক জাগ্রত করতে কক্সবাজারে চলছে ‘মানবতার জন্য শিল্প’ শীর্ষক মাসব্যাপী আর্ট ক্যাম্প।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বব্যাপী ‘শান্তির অগ্রযাত্রা’ সমর্থনে ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সহায়তার প্রত্যয়ে এ আর্ট ক্যাম্প। আর্ট ক্যাম্পে আঁকা শিল্পকর্ম দিয়ে আয়োজন করা হবে আন্তর্জাতিক চিত্র প্রর্দশনী।
রং-যেনো আর্তনাদ, আর তুলি যেনো প্রতিবাদের ভাষা হয়ে বিমূর্ত ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলছে রোহিঙ্গা নিপীড়নের প্রতিচ্ছবি। কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আঙ্গিনা অধিকারে নেয় দানবতার বিরুদ্ধে মানবতার এই শিল্প সংগ্রাম। কক্সবাজার আর্ট ক্লাবের মাসব্যাপী নান্দনিক এই আয়োজনে চারুকলার ৫০ জন চিত্রকর একেঁছেন পাঁচশোর বেশী ছবি।
এছাড়া স্থানীয় চিত্রশিল্পীরাও নিয়মিত ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করছেন। শিল্পীদের আঁকা চিত্রকর্মে ফুটে উঠেছে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর চলা অমানবিকতা। ফুটে উঠেছে তাদের দুর্ভোগ। এসব চিত্রকর্ম দিয়ে ৮ ডিসেম্বর থেকে মাসব্যাপী কক্সবাজারে চলবে প্রদশর্নী। এ থেকে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ প্রদান করা হবে প্রধানমন্ত্রীর রোহিঙ্গা বিষয়ক তহবিলে।
চিত্রশিল্পীরা জানালেন, বিশ্বকে জানাতে চায় রোহিঙ্গা সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমরা রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। নির্যাতিত নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
কক্সবাজার আর্ট ক্লাবের যুগ্ন সম্পাদক রিয়াজুল কবির জানান: প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বব্যাপী ‘শান্তির অগ্রযাত্রা’ সমর্থন ও নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সহায়তার পাশাপাশি এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বিশ্ব দরোজায় কড়া নাড়তে কক্সবাজার আর্ট ক্লাবের এই প্রচেষ্টা। বিশ্বব্যাপী চিত্রশিল্পীদের একটি করে চিত্রকর্ম দান করার আহ্বানে বিশ্বব্যাপী চিত্রশিল্পীরা সাড়া দিতে শুরু করেছে। রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত চিত্রশিল্পীরা আর্ট ক্যাম্প পরিচালনা করে যাবে। দেশে দেশে গিয়ে চিত্রপ্রদর্শনী করে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সাহায্য প্রদান করা হবে।
আন্তর্জাতিক চিত্রপ্রদর্শনী আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক তানবির সরওয়ার রানা জনান: ৮ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজারের মাসব্যাপী চলবে আন্তর্জাতিক চিত্র প্রদর্শনী। চট্রগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি বিভাগীয় শহরের পর টোকিও, নিউইয়র্ক সহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে এই চিত্র প্রদশর্নী আয়োজনে মধ্যদিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যূতে আন্তর্জাতিক মহলকে একত্রিত করা এবং বিশ্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শান্তিবার্তা পৌঁছাতেই এই প্রয়াস।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কামরুল হাসানের আকাঁ ছবি পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে বিশ্বজনমত গড়ে তুলেছিলো। আর ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে এই শিল্প আয়োজন ভুমিকা রাখবে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার করতে, এমনটাই আশা করছেন চিত্র শিল্পীরা।