রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর চলমান বর্বরতা বন্ধ করতে মিয়ানমারকে চাপ দেয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে মালয়েশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন ডিসিতে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি নাজিব রাজাক এ ঘোষণা দেন। বিবৃতিতে তারা মিয়ানমারে মানবিক বিপর্যয় ঠেকানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন।
নিউ স্ট্রেইটস টাইমস জানায়: দুই নেতা মিয়ানমারে বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে হামলা ও সহিংসতার সমাপ্তি আহ্বান করে বলেন, এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলের কড়া জবাব দেয়া দরকার।
এছাড়া অবিলম্বে নিরীহ মানুষদের উপর হামলা বন্ধ করে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর বহুদিন ধরে চলমান সংঘর্ষ-সহিংসতা সঙ্কট সমাধানে ২০১৬ সালের আগস্টে গঠিত হয় অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ওই কমিশন এক বছরের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চির কাছে জমা দেয় চলতি বছরের ২৪ আগস্ট।
৬৩ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে ত্রিশটি পুলিশ ও সেনাচৌকিতে রহস্যজনক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য। তারপরই হামলার জন্য রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের দায়ী করে জবাব হিসেবে সেনাবাহিনী পুরো অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।
সেনাবাহিনীর ওই হামলায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫শ’ মানুষ মারা গেছে, আর প্রাণভয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশে। নৌপথে পালিয়ে আসার পথে নৌকাডুবিতেও বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন না করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ড শুরু করে।