মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর তীব্র খাদ্য সংকট ও এর ফলে তাদের স্বাস্থ্যগত দুরবস্থা নিয়ে জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক সহায়তা সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)-এর প্রকাশিত একটি বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন আবার প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
মিয়ানমার সরকারের দাবি বা অনুরোধের ফলেই ডব্লিউএফপি প্রতিবেদনটি তুলে নিয়েছে বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান।
জুলাই মাসে পরিচালিত এক গবেষণায় ডব্লিউএফপি দেখে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গা মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে ৫ বছরের কম বয়সী ৮০ হাজারেরও বেশি শিশু তীব্র খাদ্যাভাবের মধ্য দিয়ে খুব দ্রুত ওজন হারাচ্ছে। এই অতিদ্রুত ওজন হারানোর বিষয়টি প্রাণঘাতী পর্যায়ের বলে গবেষণা থেকে তৈরি করা ৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
কিন্তু এখন সেই প্রতিবেদনটি জাতিসংঘের এই সংস্থাটির ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে সেখানে একটি বিবৃতি রাখা হয়েছে, যেখানে লেখা, মিয়ানমার এবং ডব্লিউএফপি প্রতিবেদনের একটি ‘সংশোধিত সংস্করণ’ তৈরির জন্য একযোগে কাজ করছে।
‘সরকারের সঙ্গে ডব্লিউএফপি’র ভবিষ্যৎ সহযোগিতা সম্পর্কে বিবৃতিতে বলা হয়, এই সংশোধিত সংস্করণ তৈরির প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির সম্পৃক্ততা থাকবে এবং দু’পক্ষের মতামতের মিল অনুসারে সংশোধন আনা হবে।
সংশোধন প্রকাশের আগপর্যন্ত প্রতিবেদনটির কোনো অংশ কোথাও ব্যবহার করা যাবে না বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।
১১ লাখ রোহিঙ্গার অধিকার আদায়ের জন্য জাতিসংঘ মিয়ানমার সরকারকে যথেষ্ট চাপ দেয়নি, বা ক্রমবর্ধমান দমন-পীড়নের বিরুদ্ধেও আশঙ্কা প্রকাশ করেনি – এমন অভিযোগ অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। এবার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর তীব্র খাদ্যসংকট ও মারাত্মক ক্ষুধাক্লিষ্টতা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন মিয়ানমারের কথায় সরিয়ে ফেলায় আন্তর্জাতিক এ সংস্থার ঝুলিতে আরও অনেক বেশি সমালোচনা ও অভিযোগ যোগ করবে এবং জাতিসংঘের ভূমিকাকে আবারও প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।