চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক উস্কানি বন্ধে সরকার সতর্ক

মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি আন্তরিকতার পাশাপাশি দেশের নিরাপত্তাকেও সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই রোহিঙ্গাদের জন্য প্রতিটি শরণার্থী শিবিরে টেলিটকের বুথ খোলা হয়েছে এবং ফেসবুকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে বানোয়াট খবর, বিভৎস ছবি ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ঠেকাতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ।

আজ মঙ্গলবার চ্যানেল আই কার্যালয়ে তারানা হালিম চ্যানেল আই অনলাইনকে এসব কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন,“মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে যারা বাংলাদেশে এসেছেন তাদের প্রতি সরকার অত্যন্ত মানবিক, একই সঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ মানবতার দৃষ্টিতে রোহিঙ্গাদের জন্য দু’টি পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা যেনো স্বজনদের সঙ্গে সহজে টেলিযোগাযোগ করতে পারে সেজন্য প্রতিটি ক্যাম্পে একেবারে কম খরচে কথা বলার সুযোগ দিতে টেলিটকের বুথ স্থাপন করেছি। তিন দিনের মধ্যে এসব অস্থায়ী বুথ বসানোর সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিলো অথচ একদিনের মধ্যেই আমরা দ্রুততার সঙ্গে তা করতে সক্ষম হয়েছি।”

তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর আগ পর্যন্ত এসব অস্থায়ী টেলিটক বুথের সেবা চালু থাকবে বলে জানান তিনি।

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রোহিঙ্গাদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন,‘ইতোমধ্যে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য একটি ডাটাবেজ তৈরি করা শুরু হয়েছে। এই তথ্যভাণ্ডার সম্পন্ন হলে প্রয়োজনে পরে রোহিঙ্গাদের জন্য সিম দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’

মানবিক কারণে সরকার রোহিঙ্গাদের প্রতি আন্তরিক তবে দেশের সার্বিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন,“আমরা এইক্ষেত্রে মানবতাকে যেমন গুরুত্ব দিয়েছি তেমনি গুরুত্ব দিয়েছি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাকে। একারণেই আমরা অস্থায়ীভিত্তিতে টেলিটকের বুথগুলো নির্মাণ করে দিচ্ছি। একই সঙ্গে ক্যাম্পগুলো মাইকিং করে অবৈধ উপায়ে সিম বিক্রি বন্ধে প্রচারণা চালাচ্ছি। রোহিঙ্গাদের কাছে সিম বিক্রয়কারী ব্যক্তি ও খুচরা বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো মানবতাবিরোধী নিপীড়নকে পুঁজি করে কোনো স্বার্থান্সেষী মহল ফেসবুক-ইউটিউবের মতো সাইটগুলোতে বানোয়াট-বীভৎস ছবি ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে। এসব অপতৎপরতার ওপর সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সজাগ দৃষ্টি আছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন,‘ফেসবুকের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত আলোচনা অব্যাহত আছে। ফেসবুকে আমাদের প্রতিনিয়ত যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সেসব বিষয় বিটিআরসিসহ অন্যান্য ফোকাল পয়েন্ট ফেসবুককে জানাচ্ছে। সে অনুযায়ী আপত্তিকর কনটেন্টগুলো ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সরিয়ে নেয়।’

তবে এক্ষেত্রে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে সবসময় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয় জানিয়ে তারানা হালিম বলেন,‘যখন আমাদের দেশের বাইরে থেকে এধরণের কনটেন্ট আসে তখন সেটা ফেসবুক থেকে দ্রুত সরানো যায় না। আমরা দেখেছি এসব কনটেন্ট মালয়েশিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসে। এগুলো ব্লক করা আমাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে যায়। এরপরও আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) আমাদের অনুরোধে অনেক সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেয়া নৃশংস ছবি, বানোয়াট খবর ব্লক করে দিয়েছে।’