ফিলিপিন্সের ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে আসিয়ান সম্মেলন। সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে রোহিঙ্গা ইস্যু প্রধান কি না তা এখনও পরিষ্কার নয়, তবে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া সম্মেলনের ভেতরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নের শিকার হয়ে আট লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, কিন্তু বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য নয়। যেহেতু বাংলাদেশ স্বাভাবিকভাবেই সেখানে উপস্থিত থাকছে না, সেজন্য দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্য দেশগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। সম্মেলনকে সামনে রেখে ও নানা চাপ সামলাতে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে আবার প্রোপাগান্ডায় লিপ্ত হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সব ধরণের নির্যাতনের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা কোন রোহিঙ্গাকে ধর্ষণ বা হত্যা করেনি, তাদের গ্রাম পোড়ায়নি বা রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে লুটপাট চালায়নি। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে চালানো অভ্যন্তরীণ তদন্তের ফলাফল প্রকাশ করে এই দাবি করা হয়। মিয়ানমার সেনাদের এই দাবির যে কোন ভিত্তি ও সত্যতা নেই, তা সবাই অনুধাবন করতে পারলেও ভূক্তভোগী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিবাদ ও আপত্তি জানানো উচিত বলে আমরা মনে করি। কূটনৈতিক বিভিন্ন পথ ধরে আসিয়ান সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণসহ সারাবিশ্বকে জানান দিতে হবে যে, মিয়ানমার মিথ্যাচার করছে। যেহেতু প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা এখন বাংলাদেশের উপরে, তাই এই ইস্যুটি নিয়ে মিয়ানমারকে চাপ দেবার প্রক্রিয়া থামালে চলবে না। বর্তমানে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা রোহিঙ্গা ইস্যুতে পাশে থাকলেও ভবিষ্যতে তারা ধীরে ধীরে সরে যাবে। এই অবস্থায় একবার থেমে গেলে বা গুরুত্বের তালিকা থেকে রোহিঙ্গা ইস্যু সরে গেলে তার পুরো লাভ তুলে নেবে অং সান সুচি সরকার, আর বিরাট ওই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি স্থায়ী হয়ে পড়বে বাংলাদেশে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি বুঝতে পারছে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে ও যাবে।