মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তিনি বলেন: মিয়ানমার সন্ত্রাসীদের শাস্তি দিতে পারে, নিরীহ মানুষকে নয়। সাধারণ জনগণ কেন ভুক্তভোগী হবে?
রোববার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
বৈঠক শেষে সুষমা স্বরাজের উদ্ধৃতি দিয়ে ইহসানুল করিম বলেন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। মিয়ানমারের বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার বাংলাদেশে আগমনকে একটি বড় সমস্যা উল্লেখ করে সুষমা বলেছেন, ‘এটা বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট বোঝা’।
‘রোহিঙ্গা ইস্যুর স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রাখাইন রাজ্যের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে আরো বেশি করে এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
অং সান সু চিকে দেয়া নরেন্দ্র মোদীর পরামর্শের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন- মোদী সু চিকে বলেছেন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার যে সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে তা যেন কোনভাবেই বিনষ্ট না হয়।’
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এবং ’৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর তাদের দুই বোনকে আশ্রয় প্রদানে ভারতের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার থেকে ২৫ আগস্টের পর শরণার্থীদের আগমন এবং বতর্মানে তাদের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছি মানবিক কারণে এবং ১৬ কোটি লোককে যদি খাওয়াতে পারি তবে মিয়ানমার থেকে আশ্রয়ের জন্য আগতদেরও খাওয়াতে পারবো। এছাড়া মিয়ানমারের সঙ্গেও আমাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও মিয়ানমার যাচ্ছেন।
সুষমা স্বরাজ এসময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার দ্বিপাক্ষিক বিষয়াবলী নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।
লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) নিয়ে যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হওয়ার কথা সেগুলোতে খানিকটা বিলম্ব হচ্ছে- যা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বতর্মান অবস্থা নিয়েও তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, ভারতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এবং পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন। ভারতের পক্ষে তাদের পররাষ্ট্র সচিব ড. জয় শংকর এবং বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের শুরুতে সুষমা স্বরাজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে জাতীয় জাদুঘরের জন্য একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ধরনের ঐতিহাসিক স্মারক ও দলিল হস্তান্তর করেন।