বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রাজধানীতে ঘণ্টা দুইয়েকের টানা বৃষ্টি। তারপর যথারীতি হাঁটু পানি জমে যাওয়া নগরীর অধিকাংশ রাস্তা। তবে বৃষ্টি শেষে কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার ঝলমলে রোদ।
রোদ উঠলেও রাস্তার পানি যেন আর নামে না। রাস্তায় জমে থাকা পানির মধ্যেই চলছিল বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহন। দুপাশে পানি সরিয়ে চলা বাসগুলোকে দেখে মনে হচ্ছিল ওগুলো বুঝি সাঁতার কাটছে!
শাহবাগ থেকে কাকরাইল, মগবাজার, সাতরাস্তা হয়ে মহাখালী পর্যন্ত বিআরটিসির একটি দ্বিতল বাসে আসার পথে চোখে পড়ে জনদুর্ভোগের বিভিন্ন চিত্র। এই পথের অধিকাংশ রাস্তাই জমে যায় পানি। কোথাও কোথাও সে পানি হাঁটু বা কোমর পর্যন্ত।
রাস্তায় পানি জমে যাওয়া বাস-মিনিবাস-মাইক্রোবাসগুলোর গতি ধীর হয়ে যায়। এছাড়াও রিকশা অটোরিকশাগুলো রাস্তায় সৃষ্টি করে বাড়তি জট। বৃষ্টির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে রাস্তায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। রাস্তা ছাড়িয়ে সে যানজট গিয়ে ঠেকে উড়াল সড়কগুলোতেও। মগবাজার-সাতরাস্তা উড়ালসড়কের প্রায় পুরোটাই ছিল গাড়িতে ঠাসা। উড়াল সড়কে বসে হাঁটু পানির ভেতর দিয়ে চলা গাড়িগুলোকে মনে হচ্ছিল যেন সাঁতার কাটছে।
সাতরাস্তা থেকে নাবিস্কো মোড় পর্যন্ত অনেক রাস্তার ফুটপাতও চলে যায় পানির নিচে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় পথচারীদেরকে। পায়ের জুতো হাতে নিয়ে, ভিজে জ্যাবজ্যাবে হয়ে পথ চলতে দেখা যায় তাদের। পানি মাড়িয়ে রাস্তা পার না হতে পারায় অনেককেই দেখা যায় রাস্তায় অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে থাকতে।
একই পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষণিকা বাসে চলাচল করা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন: কার্জন হল থেকে আমাদের বাস দুইটার দিকে ছেড়ে আসে। শাহবাগ পাড় হতেই প্রায় ১ ঘণ্টা লেগে যায়। শাহবাগ-ফার্মগেটে রোডে তীব্র যানজট থাকায় আমাদের বাসটি সে পথে না গিয়ে কাকলাইল-সাত রাস্তা হয়ে মহাখালীর দিকে আসে। প্রতিটি পথেই তীব্র জটে পরতে আমাদের।
এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলের জলাবদ্ধতার ছবি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন অনেকে। এতে দেখা যায় মতিঝিল, সবিবালয়, শান্তিনগর, বিজয়নগর, মীরপুর, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, লালবাগ, হাজারীবাগ, চকবাজার, বোরহান উদ্দিন রোড, তেজগাঁওসহ অনেক এলাকার রাস্তাই পানির নিচে চলে যায়। পানি প্রবেশ করে অনেকের বাসভবনেও। থৈ থৈ পানির চিত্র দেখা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মলচত্ত্বর কলাভনসহ বিভিন্ন এলাকায়।