চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রিয়ালের জয় ‘বাস্তব ডাকাতি’

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ‘ডাকাতির’ শিকার বায়ার্ন মিউনিখ। আসর থেকে বিদায় নেয়ার পর অন্তত এমনই বলছেন বায়ার্নের খেলােয়াড়রা। রিয়ালের জয়কে ‘বাস্তব ডাকাতি’ বলে মন্তব্য করেছেন ম্যাচে লালকার্ড দেখা আর্তুরো ভিদাল। রেফারির কড়া সমালোচনা করেছেন আরিয়ান রোবেন এবং ফ্র্যাঙ্ক রিবেরি। সরব হয়েছেন বাভারিয়ানদের সাবেকরাও।

রোনালদোর হ্যাটট্রিকে বায়ার্নকে ৪-২ গোলে হারায় রিয়াল মাদ্রিদ। দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৩ গোলে এগিয়ে থেকে শেষ চার নিশ্চিত করে জিদানের দল। প্রথম লেগে বায়ার্নের মাঠে ২-১ গোলে জিতেছিল গ্যালাকটিকোরা।

সেমিতে ওঠার লড়াইয়ে বিশ্বের দুই তারকাসমৃদ্ধ ক্লাবের লড়াই ছিল ধুন্ধুমার। প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পরে পেন্ডুলামের মতো কখনও ম্যাচের ফল হেলে পড়ছিল বায়ার্নের দিকে, আবার কখনও রিয়ালের দিকে। পেনাল্টি থেকে গোল করে প্রথমে বায়ার্নকে এগিয়ে দিয়েছিলেন লেভানডোভস্কি। রোনালদোর দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে হেডে গোল শোধ করেন।

রক্ষণের ভুল বোঝাবুঝিতে রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোসের বাড়ানো বল নিজেদের জালে জড়িয়ে যায়। এক লহমায় পাল্টে যায় দৃশ্য। উৎসব বদলে যায় হতাশায়। ঘরের মাঠে ১-২ পিছিয়ে যায় রিয়াল।

এগিয়ে থেকে সেমির টিকিটের ছবি যখন চোখে ভাসছে তখনই বড় ধাক্কা খায় বায়ার্ন। ৮৪ মিনিটে মার্কো আসেনসিওকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে আর্তুরো ভিদাল মাঠ ছাড়তে বাধ্য হলে দশ জনের দলে পরিণত হয় বাভারিয়ানরা। পরে রিপ্লেতে দেখা যায় এই যাত্রায় দোষ ছিল না ভিদালের। তাকে ভুল সিদ্ধান্তে লালকার্ড দেখানো হয়েছে। টেলিভিশন ধারাভাষ্যকাররাও একাধিকবার উচ্চারণ করেছেন, ‘ভিদাল রংলি সেন্ড অফ’।

ভিদাল বলেন, ‘এটা বাস্তব ডাকাতি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো আসরে এমন বড় দুটি দলের ম্যাচে এমন ডাকাতির ঘটনা ঘটতে পারে না।’

অতিরিক্ত সময়ের ১০৪ মিনিটে দুরন্ত এক গোল করেন রোনালদো। যদিও রিপ্লেতে দেখা গেছে পরিষ্কার অফসাইডে ছিলেন তিনি। কিন্তু বায়ার্ন খেলোয়াড়দের আবেদনে কান দেননি রেফারি। ১০৯ মিনিটে সিআর সেভেনের হ্যাটট্রিক পূরণ করা গােলও অফসাইড থেকে।

এসব ঘটনায় ভিডিও রিপ্লে না দেখায় রেফারির সমালোচনা করেন বায়ার্নের স্প্যানিশ তারকা থিয়াগো আলকানতারা। তিনি বলেন, ভিডিও রিপ্লে বিষয়টি রেফারি দ্রুতই এড়িয়ে গেছেন। তারা যোগ্যতাসম্পন্ন রেফারি হতে পারেন। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো লেভেলে এমনটা হবার নয়।’

রেফারিং নিয়ে রোবেনের কাছে ভিসাট ওয়েবসাইটের প্রশ্ন ছিল এটা কি ডাকাতি? ডাচ তারকার উত্তর, হ্যাঁ। আমার ধারণা তাই। এটা লজ্জারও।

রোনালদোর দুটি অফসাইডের স্কিন শট ইনস্ট্রাগ্রামে আপলোড করে বায়ার্নের ফরাসি উইংগার রিবেরি লিখেছেন, ‘ঘটনা প্রমাণিত, এক বছর কঠিন পরিশ্রমের পর রেফারিকে ধন্যবাদ।’

বায়ার্ন কোচ কার্লো আনচেলত্তি বলেন, আমি মনে করি না রিয়াল রেফারিকে প্রভাবিত করেছে। অফিসিয়ালরা সাধারণ ভুল করেছে। আমি কখনো ভিডিও প্রযুক্তির পক্ষে নই তবে এক্ষেত্রে সেটার দরকার ছিল।

তিনি আরও বলেন, কোয়ার্টার ফাইনালে আপনাকে একজন ভাল রেফারি দিতে হবে।

রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে বায়ার্ন কোচের সঙ্গে একমত জিদানও। তবে তিনি বলেছেন, এই ব্যাপার নিয়ে আমি কিছুতে জড়াতে চাই না।

রেফারির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন বায়ার্নের সাবেক খেলোয়াড় ওয়েন হারগ্রিভস। কানাডিয়ান-ইংলিশ এই তারকা বিটি স্পোর্টসকে বলেন, ফুটবলে আমরা কেন প্রযুক্তির পুরোপুরি ব্যবহার করছি না। এটা অগ্রহণযোগ্য। এই ম্যাচ রেফারির সিদ্ধান্তেই মীমাংসিত হয়েছে।

একই ইস্যুতে সুর মিলিয়েছেন সাবেক বায়ার্ন-চেলসি তারকা ও জার্মান অধিনায়ক মাইকেল বালাক।