শাড়ি পরে চোখের ভরে কাজল আর একটা লাল টিপ দিলেন। কিন্তু তার পরেও সাজটা কেমন যেন অপূর্ণ মনে হচ্ছে। খেয়াল করে দেখুন, হাতে রংবেরঙের চুড়ি পরেছেন তো?
বাঙালি সাজে চুড়ির কোনো তুলনা নেই। আবার পাশ্চাত্যের পোশাকের সাথেও ফ্যাশনেবল চুড়ি দারুণ মানিয়ে যায়। চুড়ি ছাড়া তাই বৈশাখের সাজটাই অপূর্ণ রয়ে যায়। বৈশাখে চুড়ির কদরটা একটু বেশিই থাকে ফ্যাশন সচেতনদের কাছে। চুড়ি এখন আর কাঁচ কিংবা সোনা-রূপাতে সীমাবদ্ধ নেই। নানান উপকরণ দিয়ে তৈরি চুড়ি পোশাকের সাথে মিলিয়ে বেছে নিচ্ছেন নারীরা।
বৈশাখের সাজে কাঁচের চুড়ির জুড়ি নেই। শাড়ি কিংবা কামিজের সাথে দারুণ মানিয়ে যায় কাঁচের চুড়ি। উৎসবের মাত্রাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় রেশমি চুড়ি খ্যাত কাঁচের চুড়ি। রেশমি চুড়ির দামটাও থাকে হাতের নাগালের মধ্যেই। এক ডজন চুড়ির দাম ২০ টাকা থেকে শুরু হয়। পাইকারি কিনতে চাইলে পুরানো ঢাকার চকবাজার চলে যেতে পারেন। সেখানে কাঁচের চুড়ির পাইকারে বাজারে নানান নকশার চুড়ি মিলবে বেশ কম দামে। আর পুরানো ঢাকার জ্যাম এড়াতে চাইলে নিউমার্কেট, ইডেনের সামনের ফুটপাথ, টিএসসির ফুটপাথ, কৃষি মার্কেট, মৌচাক মার্কেটে চলে যেতে পারেন কাঁচের চুড়ি কিনতে। এছাড়াও বৈশাখের আগে পাড়া-মহল্লার অনেক দোকানে রেশমি চুড়ি বিক্রি করা হয়। শাড়ির সাথে মিলিয়ে কিনে ফেলুন রংবেরঙের রেশমি চুড়ি।
কাঁচের চুড়ির পরে এবার কদর পাচ্ছে মেটালের চুড়ি। রঙের ছটা নেই এই চুড়িগুলোতে। কিন্তু নতুন প্রজন্মের কাছে এখন মেটালের চুড়ি-গহনাই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ যেকোনো পোশাকের সাথেই মানিয়ে যায় এই চুড়িগুলো। পিতল কিংবা রুপার তৈরি নানান নকশার এই চুড়িগুলো খুব সাধারণ সাজকে জমকালো করে তুলছে। মেটালের চুড়ি গুলোর জন্য খোজ করতে পারেন ধানমন্ডির আনাম র্যাংগস প্লাজা, যমুনা ফিউচার পার্ক, সানরাইজ প্লাজা, নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি কিংবা দেশি দশের ফ্যাশন হাউজগুলোতে। এছাড়াও ফেসবুকেও বেশ কিছু পেজ এধরণের চুড়ি বিক্রি করছে। চৈত্রের গরমে মার্কেটে যেতে না চাইলে, এই পেজগুলো বাড়িতেই পৌঁছে দেবে আপনার পছন্দের চুড়ি।
বৈশাখের সাজের সাথে সুতার চুড়িও বেশ মানিয়ে যাবে। প্লাস্টিক, কাঠ কিংবা মেটালের চুড়ির ওপর নানান রঙের সুতা পেঁচিয়ে আকর্ষণীয় করে তোলা হয় সুতার চুড়িকে। যে কোনো পোশাকের সাথে খুব সহজেই মানিয়ে যায় এই চুড়িগুলো। শাড়ি তো বটেই টপস-জিনসের সাথেও বেশ মানাই নানান রঙের এই ফ্যাশনেবল চুড়িগুলো।
কাঁচ, মেটাল কিংবা সুতার চুড়ি ছাড়াও বেঁছে নিতে পারেন ফুলের চুড়ি। শাহবাগের ফুলের দোকানগুলোতে বললেই হাতে ফুলের মালা বেঁধে চুড়ি বানিয়ে দেবে তারা। প্রচণ্ড গরমেও ফুলের সাজে সতেজ দেখাবে আপনাকে।
আর মাত্র কয়েকদিন বাকি আছে পহেলা বৈশাখের। তাই পোশাকের সাথে মিলিয়ে ফ্যাশনেবল চুড়ি কিনে ফেলুন এখনই। তাঁতের শাড়ি, কপালে লাল টিপ, খোঁপায় ফুলের সাজ, আর দু’হাত ভরা রং-বেরংয়ের চুড়িতে বরণ করে নিন নতুন বছরকে।