বিশ্বজুড়ে শিশুদের ওপর সহিংসতা বেড়েই চলছে। ২০১৭ সালে এই নির্যাতনের পরিমাণ ভয়াবহ। জাতিসংঘের তথ্য মতে, যুদ্ধের কারণেই বর্তমানে প্রায় বেশির ভাগ শিশুর জীবন বিপন্ন হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে শিশু ধর্ষণসহ হত্যা এবং শ্লীলতাহানির ঘটনা । এই শিশুদের বড় অংশই বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় যুদ্ধ, সংঘাত, এবং দ্বন্দ্বের কারণে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক শিশু তহবিল (ইউনিসেফের) রিপোর্ট অনুযায়ী, শিশুদের এই সহিংসতা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে এবং দিন দিন এই নির্যাতনের আকার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইউনিসেফের এক অনুষ্ঠানে ডিরেক্টর ম্যানুয়াল ফনটেইন বলেন, এই নির্যাতনের ফলে শিশুগুলো তাদের বাড়ি, শিক্ষা, খেলার জায়গা হারাচ্ছে।
এছাড়া মিয়ানমারের বেশির ভাগ রোহিঙ্গা শিশু, নাইজেরিয়ার শিশু, সাউথ সুদানের শিশু, ইয়েমেন, সেন্ট্রাল আফ্রিকান শিশু নির্যাতনের হার বেশি বলে বিবিসির বিশ্লেষণে উঠে এসেছে।
রিপোর্টে উঠে আসে, মুসলিম রোহিঙ্গা শিশুর মধ্যে প্রায় ৫ লাখ শিক্ষার কোন সুযোগ পাচ্ছে না। এছাড়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শিশুরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে শিশুদের ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়, ওই দেশের সেনাবাহিনী এই ধরনের নির্মম অত্যাচারের সাথে জড়িত।
জঙ্গি সংগঠন বোকোহারাম নাইজেরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিম ক্যামেরুনে প্রায় ১৩৫ জন শিশুকে আত্মঘাতী বোমা হিসেবে ব্যবহার করেছে। ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালের এই সংখ্যা পাঁচগুণ। দক্ষিণ সুদানে ১৯ হাজারেরও বেশি শিশুকে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ইয়েমেনের যুদ্ধে অফিসিয়ালি প্রায় ৫ হাজার শিশুর মৃত্যুর কথা জানা থাকলেও এর সংখ্যা আরও বেশি বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
ইউনিসেফ জানায়, এই হত্যাকাণ্ড বছরের পর বছর ধরে হয়ে আসছে। এই নির্মমতা নতুন কিছু না হলেও এর ভয়াবহতা দিন দিন বাড়ছে। কিছু জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে মুক্তি পাওয়ার পর চরমপন্থি দলগুলো দ্বারা অপহরণ করে শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু নির্যাতন নয়, ক্ষুধা ও দারিদ্রের কারণেও গড়ে প্রতিদিন প্রায় গড়ে ৯ হাজার শিশু মারা যাচ্ছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়: এক শ’ মিলিয়ন শিশু দাসত্ব, পাচার ও শিক্ষাবঞ্চনাসহ বিভিন্ন সহিসংতার শিকার হচ্ছে। আর বিশ্বের ২শ’ ৩০ মিলিয়ন শিশু সংঘাতপূর্ণ এলাকায় বসবাস করছে। তাদের জীবন ও শিক্ষা বিপদগ্রস্ত।