চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

যেভাবে পাওয়া যাবে ‘ডাক টাকা’

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলেও এখন বাড়ির পাশের ডাকঘরে গিয়ে মোবাইল নম্বরটি দিয়ে মাত্র ২ টাকায় অ্যাকাউন্ট খুললেই মিলবে একটি ‘ডিজিটাল ওয়ালেট’ন, সহজ ভাবে বললে একটি অদৃশ্য মানিব্যাগ। ডাকঘরের পোস্টাল ক্যাশ কার্ড দিয়ে এই ওয়ালেটে টাকা ভরা যাবে। তখন ডিজিটাল ওয়ালেটের এই টাকা হয়ে যাবে ‘ডাক টাকা’। নিজের মোবাইলের অদৃশ্য মানিব্যাগ বা ডিজিটাল ওয়ালেটের এই ডাক টাকা যেকোনো সময় ওঠানো যাবে-পাঠানো যাবে। পকেটে নগদ টাকা না থাকলেও মোবাইলের এই ডিজিটাল ওয়ালেটে ডাক টাকা থাকলে কেনাকাটা, বিল দেয়ার কাজ করা যাবে অনায়াসে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ‘ডাক টাকা’ সেবার কারিগরি সহযোগিতা ও পেমেন্ট সুইচ প্রোভাইডার হিসেবে কাজ করছে ডি-মানি।

চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে ‘ডাক টাকা’ সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন ডি-মানি’র ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া বশির কবির।

তিনি বলেন: ‘ডি-মানি সফটওয়্যার এবং পোস্ট অফিসের পোস্টাল ক্যাশ কার্ডের সমন্বিত সেবা ‘ডাক টাকা’। দেশে প্রায় ৯ হাজার পোস্ট অফিস আছে। ডাক টাকার সেবা পেতে প্রথমে বাড়ির কাছের পোস্ট অফিসে যেতে হবে। সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা আঙুলের ছাপ দিতে হবে। এরপর নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে ২ টাকা জমা দিয়ে একটি হিসাব খুলতে হবে। হিসাব খুললেই ওই ব্যক্তির মোবাইলফোনে ডিজিটাল ওয়ালেট তৈরি হয়ে যাবে। তারপরে ডাকঘরের পোস্টাল ক্যাশ কার্ড দিয়ে মোবাইলের সেই হিসাবে টাকা রিচার্জ বা অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতে হবে। এরপর প্রয়োজনে কেনাকাটা করে দাম মেটানোর সময় এনএফসি (নেয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন) ব্যবহার করে বা কিউআর (কুইক রেসপন্স) কোডের ওপর মোবাইল ফোনটি ধরলেই পেমেন্ট করা হয়ে যাবে।’

তবে স্মার্টফোন নেই এমন জনগোষ্ঠীর কথা ভেবেই এই সেবা চালু হচ্ছে জানিয়ে মাইক্রোসফট বাংলাদেশের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বর্তমানে ডি-মানির ভাইস চেয়ারম্যান জানান ডাক টাকার সেবা মিলবে সাধারণ ফিচার ফোনে।

সোনিয়া বলেন:“আমরা ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা মানুষদের ডাক টাকার মাধ্যমে ব্যাংকিংখাতে অন্তর্ভুক্ত করতে চাই। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর অনেকেই পড়তে জানে না, স্বাক্ষর করতে জানে না। তাদের হাতে স্মার্টফোন নাই। তাই শুধু তাদের হাতের সাধারণ ফোনটিকে ডাক টাকার ওয়ালেট করতে ফোন নম্বরটি দিয়ে বিনামূল্যে অ্যাকাউন্ট খুলে দেবো এবং মাত্র ২ টাকা জমা রেখে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যাংকিংয়ের মতো সেবা দেবো।”

সাধারণ মানুষ ডাক টাকায় আগ্রহী হবে এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন:‘মানুষজনকে এতো কম টাকায় সেবা দেবো যে তারা আসবে। ভালো সেবা দিলে মানুষ আসবেই। আমরা দেখেছি গ্রামের মানুষ পিন নাম্বার, সংখ্যাভিত্তিক কোড মনে রাখতে পারে না। এদিক বিবেচনায় রেখেই আমরা ডি-মানি সফটওয়্যার তৈরি করেছি। এতে গ্রামের একজন নারী গল্পের মতো করে পাসওয়ার্ড বা পিন নম্বর লিখতে পারবেন। যেমন: গ্রামের একজন মা তার ছেলেকে সকালে একটি ডিম,দু’টি কলা খেতে দিয়েছিলেন। ডি-মানি ওয়ালেটের জন্য এখন তিনি চাইলে পিন নম্বরের জায়গায় মনে রাখার সুবিধার্থে লিখতে পারবেন একটি ডিম, দু’টি কলা। যাদের দৃষ্টিশক্তি নেই তাদের জন্যও এই সফটওয়্যারে বিশেষ সুবিধা রাখছি।’

ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা প্রায় ৩ কোটি মানুষকে ডিজিটাল লেনদেনের আওতায় আনতে আগামী ৩ মাসের মধ্যে ডাক টাকা সাধারণ মানুষের নাগালে আনতে কাজ চান বলে জানান সোনিয়া বশির কবির।

দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে প্রযুক্তির মাধ্যমে আধুনিক ব্যাংকিং সেবা দিতে সোমবার ১১ ডিসেম্বর ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে ‘ডাক টাকা’ সেবার উদ্বোধন করা হয়। টাঙ্গাইলের মর্জিনা বেগমের হাতে থাকা ফিচার ফোন নম্বর দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে এই সেবার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।