বিশ্রাম সবাই পাচ্ছেন কম-বেশি করে। শুধু পাচ্ছেন না লিওনেল মেসি। আদৌ পাবেন কিনা সেটারও নিশ্চয়তা নেই! বার্সেলোনা কোচ আর্নেস্টো ভালভার্দে তাকে খেলাচ্ছেন প্রতিটি ম্যাচের শুরু থেকে শেষ মিনিট পর্যন্ত। একই অবস্থা আর্জেন্টিনা দলেও। আলবিসেলেস্তাদের কোচ হোর্হে সাম্পাওলিও মেসি ছাড়া কোন ভরসার নাম খুঁজে পাচ্ছেন না। এখন তাই প্রশ্ন উঠছে, টানা খেলার চাপে মেসি যদি চোটে পড়েন, কী হবে বার্সা ও আর্জেন্টিনার?
লা লিগায় দুর্দান্ত সূচনা করেছে বার্সেলোনা। শুরুর পাঁচ ম্যাচেই জয় পেয়েছে দলটি। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই ছিল মেসির প্রত্যক্ষ ভূমিকা। দুই হ্যাটট্রিকে করে ফেলেছেন ৯ গোল। আর্জেন্টিনার হয়ে গোল না পেলেও তাকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে দলের আক্রমণ। রাশিয়া বিশ্বকাপে যেতে হলে মেসির জ্বলে ওঠা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই দুবারের বিশ্বজয়ী দলটির সামনে।
জয় কিংবা বিশ্বকাপে যেতে মরিয়া বার্সা ও আর্জেন্টিনার কোচদ্বয় একটা বিষয় প্রায় এড়িয়ে যাচ্ছেন, বিশ্রাম পাওয়া হচ্ছে না মেসির। এমনকি দলের জয় প্রায় নিশ্চিত জেনেও ম্যাচের শেষ পর্যন্ত মেসিকে খেলিয়ে যাচ্ছেন ভালভার্দে। তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও মাঠে নামতে হচ্ছে আর্জেন্টাইন তারকাকে।
টানা খেলার মধ্যে থাকা মেসি যদি চোটে পড়েন, তার বিকল্প নেই আর্জেন্টিনা বা বার্সেলোনায়। ল্যাটিন অঞ্চলের অন্যতম পরাশক্তি আর্জেন্টিনার সামনে দলের অধিনায়কই প্রধান ভরসা। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা থেকে মেসিকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। রেফারির প্রতি অশ্রাব্য বাক্যবাণের জন্য যে চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন মেসি, আন্তর্জাতিক আদালতে অনেক দেন-দরবারের মাধ্যমে সেটি মিথ্যা প্রমাণ করতে হয়েছে।
দলে আছেন পাওলো দিবালা, সার্জিও আগুয়েরো, মারিও ইকার্দি, অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়াদের মত তারকারা। তারপরও মেসিই প্রধান ভরসা সাম্পাওলির। ঝুলে থাকা বিশ্বকাপ যাত্রার স্বপ্নটা বাস্তবে সফল করে দেখাতে হলে তার মেসি চাই।
বার্সেলোনার অবস্থা আরও করুণ। নেইমার দল ছেড়েছেন, সুয়ারেজও প্রায় ধুঁকছেন। নেইমারের বিকল্প হিসেবে যিনি এসেছেন সেই ডেম্বেলে মাত্র তিন ম্যাচ খেলে ছিটকে গেছেন চারমাসের চোট-বিরতিতে। ভালভার্দের সামনেও এক মেসি ছাড়া বিকল্প নেই বললেই চলে।
আগামী অক্টোবরেও বিশ্রামের চিন্তা তুলে রাখতে হবে মেসিকে। ওই মাসে তাকে খেলতে হবে বিশ্বকাপ বাছাই, লা লিগা, কোপা ডেল রে এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মত গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলোতে।
মেসি নিজেও জানেন তার বিকল্প নেই। তাই হাসি মুখেই জাতীয় দল এবং ক্লাবের হয়ে ক্লান্তিহীনভাবে খেলে যাচ্ছেন ফুটবল জাদুকর। ক্লান্তি ও চোট এড়িয়ে কতদিন খেলে যেতে পারেন সেটাই এখন দেখার!