চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মেঘকে কথা দিলো সাংবাদিকরা

সাগর-রুনি হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সোচ্চার থাকবেন বলে নিহত দম্পতির একমাত্র সন্তান মাহির সরওয়ার মেঘকে কথা দিয়েছেন সাংবাদিকেরা।

সাগর-রুনি হত্যার ৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত থাকা মেঘকে এমন প্রতিজ্ঞার কথা জানান তারা। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকেরা হাত উচিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

শনিবার বেলা ১২ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) প্রাঙ্গণে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশের শুরুতেই সাগর-রুনি স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে নিহত সাংবাদিক মেহেরুন রুনির ভাই নওশের আলম রোমান বলেন, ‘ আমরা বিচারের আশা ছেড়ে দিলেও আমরা বিচার চাই। আপনারা সাংবাদিকরা সজাগ থাকলে এই হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা পড়বে না।’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মোরছালিন নোমানির পরিচালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহামুদ, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী,ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাবান মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ সহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।

একাধিক বক্তা এই হত্যা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানেন না মর্মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের নিন্দা জানান এবং তার পদত্যাগ দাবি করেন।

প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, আগামী ২১ মার্চের মধ্যে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করা হলে গণতদন্ত কমিশন গঠন করে ঘটনা উদঘাটন করা হবে।

প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সকল সংগঠনের অংশগ্রহণে এক যৌথ সভা আহ্বান করা হয়েছে। ওই সভা থেকে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে বলে জানান,ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় ওই বাসায় ছিল তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর মেহেরুন রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন। ঐ মামলার ধারাবাহিকতায় শেরেবাংলা নগর থানার হাত ঘুরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি। কিন্তু দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিন পর ডিবি হাইকোর্টের কাছে তাদের ব্যর্থতা স্বীকার করলে আদালত র‌্যাবকে এই মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন।

তার পর থেকেই র‌্যাব এই মামলাটি তদন্ত করছে। এবং মামলার তদন্তের বিষয়ে একাধিকবার অগ্রগতি আদালতকে জানিয়েছে। কিন্তু গত পাঁচ বছরে ৪৬ বার সময় নিয়েও এখন পর্যন্ত কোন তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে পারেনি র‍্যাব।

আলোচিত এই মামলায় আটজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মো. সাইদ, মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুণ, সাগর-রুনির ভাড়া বাসার নিরাপত্তা প্রহরী এনামুল, পলাশ রুদ্র পাল এবং নিহত দম্পতির বন্ধু তানভীর রহমান। তবে এদের মধ্যে থেকে তানভীর রহমান ও পলাশ রুদ্র পাল সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া জামিনে রয়েছে।