চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মুসলিম বিশ্বে সবচেয়ে ধনী যে ১০ নারী

মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের নানা দেশে সম্পদের অংশীদার হিসাবে সবসময় ছেলেদেরকে প্রাধ্যান্য দেয়া হয়। তবে মুসলিম বিশ্বের অনেক নারী আছেন যারা নিজ যোগ্যতা কিংবা পারিবারিক উত্তরাধিকারের দিক থেকে বিপুল সম্পদের মালিক হয়ে জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্বের ক্ষমতাধর নারীর আসন। মুসলিম বিশ্বের এমনই ১০ জন ধনী নারীর জীবন কাহিনী তুলে ধরা হল:

রাশা সাঈদ
রাশা সাঈদ হলেন বিলিয়নিয়ার ওয়াফিক সাঈদের কন্যা যিনি মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারীদর মধ্যে অন্যতম। রাশা সাঈদের পরিবার ১.৫ বিলিয়ন সম্পদের মালিক। সে নিজেও উদ্যোক্তাদের জন্য ডিজিটাল ডিজাইন কোম্পানি ‘টকেন’ এর সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সুলতানাহ নূর জাহিরা
সুলতানাহ নূর জাহিরার ১৯৭৩ সালে মালেশিয়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। ২০ বছর পর তিনি সুলতান মিজান জয়নাল আবেদিনকে বিয়ে করে রাজকীয় জীবনে প্র্রবেশ করেন। তিনি ঘর সাজানোর কাজ করতে পারদর্শী। এছাড়া বই পড়া, রান্না করা তার অন্যতম শখ। ২০০৪ সালে তিনি ভারত সাগরে মানবতার কাজে গুরত্বর্পূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে ভূমিকম্পের পর বিধস্ত এলাকা গুলোর জন্য তিনি বড় অংকের একটি তহবিল গঠন করেন। তিনি এখন নিজেকে মার্শাল আর্ট এবং ঘোড়ায় চড়তে ব্যস্ত রেখেছেন।

ফাতিমা আল জাবের
ফাতিমা আল জাবের শুধু অর্থ সম্পদে নয় ক্ষমতার দিক দিয়েও বিত্তবান। তিনি পারিবারিক ব্যবসা থেকেই ব্যবসা শুরু করেন। তিনি আরব আমিরাতের আইকনিক ভবনগুলোর নির্মাণ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ৪০ বছর আগে থেকে দুবাইয়ে বাবার তৈরী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আল জাবের গ্রুপের অপারেটিং অফিসার হিসাবে নিয়োজিত আছেন। তিনি আমিরাতের ইতিহাসে প্রথম নারী যে আবুধাবি চেম্বারস অব কমার্সের বোর্ড  অব ডিরেক্টরস এর সদস্য নির্বাচিত হন।

২০১৪ সালের ফরবেস ম্যাগাজিনে নারী বিশ্বের ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় ফাতিমাকে বিশ্বের ৯৪ তম ক্ষমতাধর নারী হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। আল জাবের গ্রুপের আনুমানিক মূলধন প্রায় ৯ বিলিয়ন ইউএস ডলার।

আমাল ক্লোনি
জর্জ ক্লোনির বউ আমাল ক্লোনি। লেবানিজ মা বাবা মুসলিম হলেও তিনি বিবাহ করেন জর্জকে । তিনি আমেরিকা এবং যুক্তরাজ্যে আইন অনুশীলন করেন। ২০০২ সালে ইংল্যান্ডের  ওয়েলসে ব্যারিস্টার হিসাবে যোগদান করেন। ক্লোনি ব্যারিস্টারি পেশায় নিয়োজিত থেকে মানব সেবায়  কাজ করে যাচ্ছেন। অক্সফোর্ডের সেন্ট হগস কলেজ থেকে আইনে পড়াশনো করার পাশাপাশি কর্ম জীবনে তিনি পেয়েছেন নানা খ্যাতি। তিনি ক্লোনি ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। ক্লোনির নামে প্রতি বছর একজন লেবানিজ ছাত্রীকে আমেরিকায় স্কলারশীপ প্রদান করে থাকেন।

রানী রানিয়া
জর্ডানের ব্যস্ত রানী নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন তরুণদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্ষমতায়ন এবং সংস্কৃতির আদান-প্রদানের জন্য। তিনি নিজের দেশ এবং বিদেশে কাজ করে যাচ্ছেন। তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে রোম বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক মাস্টার্স ডিগ্রি প্রদান করে। রানীদেরকে আগে দেখা যেত হয় ছবিতে আর না হলে পেইন্টিংয়ে। কিন্তু জর্ডানের রানী একদম ভিন্ন। তার দেখা মিলবে টুইটার, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে। তিনি নীট ৭৫০ মিলিয়ন ডলারের মালিক।

জাহা হাদিদ
ইরাকে জন্ম নেয়া মুসলিম বিশ্বের একজন নাম করা আর্কিটেক্ট। তিনি পুলিৎজার পুরস্কারসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি ব্রিটিশ নাগরিক। তার কাজের ধরনের জন্য তাকে বলা হত ‘কুইন অব দ্য কার্ভ’। লন্ডন অলেম্পিক ২০১২ সালে সুইমিং পুলের নকশাকারী ছিলেন জাহা হাদিদ। চায়নার অপেরা হাউস গুংজুয়া এর নকশাকরীও তিনি। তার আনুমানিক সম্পদের পরিমান ২১৫ মিলিয়ন ডলার। তাকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দামী আর্কিটেক্ট।

ফাতিমা কুলসুম জোহর গোদাবরী
ফাতিমা কুলসুম জোহর গোদাবরী  হলেন সৌদি আরবের সাবেক রাজকন্যা এবং বর্তমান রানী। তার চেহারা এত দিন কেউ না দেখতে পারলেও কিছুদিন হলো তার ছবি ফাঁস হয়ে যায়। তার ছবি সবার দেখার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। তাকে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

শেখ লুবনা আল কাশেমী
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাসে তিনি প্রথম নারী হিসবে মন্ত্রী পদে আসীন হন। তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় খেকে এমবিএ করেন। বর্তমানে জায়েদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালিন করছেন।

আমিরহ আল-তাওয়ীয়েল
আমিরহ আল-তাওয়ীয়েল দেখতে যেমন সুন্দর ব্যাক্তিত্বেও অসাধারণ সৌদি এ রাজকন্যা। তিনি গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি নিয়েছেন নিউ হ্যাভেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আল ওয়ালেদ বিন তালাল ফাউন্ডেশন এর এক্সিকিউটিভ কমিটিতে রয়েছেন। সৌদি আরবে এই সংগঠনটি নারীর ক্ষমতায়ন এবং বাসস্থান নিয়ে কাজ করে থাকে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং পরিবর্তনের জন্য তরুণদের তিনি দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ বলে মনে করেন। তিনি প্রায় ১৮ মিলিয়ন ডলারের মালিক। ২০১৩ সালে রাজপুত্র আলাওয়াদ বিন তালালের সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছদ হয়।

রাজকুমারী হাজা হাফিজা বোলকিয় ৪
ব্রুনাইয়ের রাজকন্যা হাফিজা রাজা সুলতান হাসান বোলকিয়ার কন্যা। ছোটবেলা থেকেই রাজকন্যা প্রচুর খরচ করতে পছন্দ করতেন। এখন বয়স ৩৭ বছর। কন্যার কোন আবদার অপূর্ণ রাখেননি রাজা সুলতান হাসান বোলকিয়ার। তার বাবার প্রায় ৭ হাজার বেশি কার ছিলো। রাজকন্যার জন্য পিতা একটি রোল্স রয়েস গাড়ীকে ২৪ ক্যারেট দিয়ে তৈরী করে দেন।

সালওয়া আইদ্রিসি আখন্দ
মরক্কোর সবচেয়ে ক্ষমতাশীল ব্যাবসায়ী হলেন সালওয়া আইদ্রিসি আখন্দ। তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা। আকসাল গ্রুপ নামে তার একটি ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতি বছর তার ব্যাবসায়ীক এই প্রতিষ্ঠানে ১৫ মিলিয়ন দর্শনাথী আসে। তবে তার সম্পদের পরিমান প্রায় ৫১৪ মিলিয়ন ডলার। মরক্কোর সবচেয়ে নামীদামী ব্র্যান্ড গুলো তার দখলে।