শুক্রবারের ছুটির সন্ধ্যা। বেজে ওঠে ঢোল। ঢোলে বাড়ি দেন শহীদ মুনীর চৌধুরীর স্ত্রী লিলি চৌধুরী। শুরু হয় উৎসবের। সাত দিনব্যাপী নাট্যেৎসবের। পুষ্প ও মঙ্গল নাট্যেৎসব। তাদের উৎসব যারা শুরু থেকে সাড়ে চার দশক ধরে বলে আসছে নাটক শুধু বিনোদন নয় শ্রেণী সংগ্রামের হাতিয়ারও। শহীদ জায়া সম্মানিত হন উৎসবে। এতে যেন সম্মান পায় উৎসবও।
এরপর মন জুড়ানো সঙ্গীতের তালে নন্দন মঞ্চে ফুঁটে বাহারি আলোর ভাঁজে মানুষ ফুল। এবার গান। ‘জয় হোক জয় হোক শান্তির জয় হোক।’ এমন কথার গানে বাহারি ফতুয়া আর শাড়িতে বর্ণিল সজ্জায় নাচে তরুণ-তরুণীর দল। হংকং, ইরান, নরওয়ে আর ভারত থেকে আসা নাট্যকর্মীরা অবাক হয়ে বাংলার রং দেখে। মুগ্ধ দর্শক হয়ে থাকেন ইরান এবং নরওয়ের বাংলাদেশে থাকা রাষ্ট্রদূত। ইরানের রাষ্ট্রদূত ড. আব্বাস ভায়েজি এবং নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন দুজনেই বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সাংস্কৃতিক আদান প্রদান আরো বাড়াতে আগ্রহী তারা। মুগ্ধ দর্শক হয়ে থাকেন প্রধান অতিথি সংস্কৃতিমন্ত্রী ও শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক। মুগ্ধ নন্দন মঞ্চ ঘিরে থাকা হাজারো দর্শক।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে দর্শনীর বিনিময়ে নাটক শুরু করা অন্যতম নাট্যদল আরণ্যক ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজন করেছে সপ্তাহব্যাপী এ উৎসব। এতে ভারত, ইরান ও হংকংয়ের নাট্যদল তাদের নাটক নিয়ে উপস্থিত থাকছেন। ভারতের ২টি, ইরানের ২টি ও হংকয়ের ১টি নাটক মঞ্চস্থ হবে। উৎসবে আরণ্যক নিজস্ব ৩টি প্রযোজনা নিয়ে থাকবে মঞ্চে।
তারপর আসে ‘ইবলিশ’। প্রসেনিয়ামের আলো আঁধারীতে নাট্যকার-নির্দেশক মামুনুর রশীদের রচনা ও নির্দেশনায় আবারো উঠে আসে আঁশির দশকে তীক্ষ্ণ বৈশ্বিক সামাজিক অনাচারের রূপ তুলে ধরা ‘ইবলিশ’। বর্তমান বিশ্বজুড়ে ধ্বংস ডামাডোলে মানবতার বিপর্যয়ে ‘ইবলিশ’ এখনও প্রতিবাদে প্রত্যয়ী করে তোলে যেন। উৎসবে মঞ্চনাটকের পাশাপাশি থাকছে পথনাটক, সেমিনার ও নাট্যমেলা।
প্রতিবেদক: হাসান আহমেদ
ছবি: ওবায়দুল হক তুহিন