চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মুক্তিযুদ্ধের কঠিন সময়েও প্রিয়তমার প্রতি ভালোবাসার দৃষ্টান্ত

মুক্তিযুদ্ধের ওই কঠিন সময়েও আপনজনদের ভোলেননি মুক্তিযোদ্ধারা। মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও প্রিয়তমা স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা।

মুক্তিযুদ্ধের সময় আখাউড়া এবং পাশের এলাকায় নিহত শহীদদের কসবায় সমাহিত করা হয়। ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কোল্লাপাথর স্মৃতিসৌধে ৪৯ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কবর রয়েছে। ৫০টি কবরের জায়গা থাকলেও একটি কবরের জন্য জায়গা ফাঁকা পড়ে আছে।

শরিয়তপুরের নড়িয়ার মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম যুদ্ধ করেছিলেন ২ নম্বর সেক্টরে। যুদ্ধের সময় তার সহযোদ্ধাদের বলে গিয়েছিলেন, যদি যুদ্ধে তার মৃত্যু হয়, তাহলে তার প্রিয়তমা স্ত্রীকে যাতে তার পাশেই কবর দেয়া হয়।

মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামের স্ত্রী হাজেরা নজরুল আজও স্বামীর স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন। স্বামীকে হারিয়েছেন ৪৭ বছর, তবে তার বর্ণনায় মনে হচ্ছিল এইতো সেদিন তাদের বিয়ে হলো।

হাজেরা নজরুল

বিয়ের মাত্র ৯ বছরের মাথায় শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। প্রিয়তমা স্ত্রীকে শেষ বিদায় জানিয়ে যুদ্ধে অংশ নেন প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম। হাজেরা নজরুল বলেন: মাত্র দশ বছরের দাম্পত্য ছিলো আমাদের। আমি তাকে বলেছিলাম, তুমি আমাদের ছেড়ে কেন যাবে? সে বলেছিলো, তুমি আমাকে দেশের জন্য উৎসর্গ করো। তারপর আমরা ঘুমাতে গেলাম। পরদিন সে অফিসে গেলো, আর ফিরে এলো না।

নজরুল ইসলামের কবরের পাশের কবরটি এখনো ফাঁকা স্ত্রীর জন্য

স্বামীকে হারিয়ে যুদ্ধ পরবর্তী সময় বেঁচে থাকার যুদ্ধে শামিল হন অধ্যাপিকা হাজেরা। যে যুদ্ধ ছিলো আরও কঠিন। মাত্র ৪ ঘণ্টা ঘুমিয়ে দিনরাত এক করে কাজ করে স্বামীর আদর্শেই ৪ সন্তানকে বড় করেছেন।

জীবনের এই শেষ বেলায় এখনও স্বামীই তার কাছে আদর্শ। প্রিয়তম স্বামীর কবরের পাশেই শায়িত হবেন, এজন্য লেখক অধ্যাপিকা হাজেরা নজরুলও অপেক্ষায় আছেন ৪৭ বছর।

আরও দেখুন ভিডিও রিপোর্টে: