মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর দণ্ড কার্যকর না করে তা স্থগিতের দাবি জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এক বিবৃতিতে মীর কাসেম আলীর বিচার প্রক্রিয়াকে একটি ত্রুটিপূর্ণ বিচার হিসেবেও উল্লেখ করেছে অ্যামনেস্টি।
তাদের দাবি, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা অপরাধ করেছে তাদের ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত। তাই বলে মৃত্যুদণ্ড সেটার সমাধান হতে পারে না। এই সাজা এই অঞ্চলে আরো বেশি দুচিন্তার জন্ম দেবে এবং সমাজকে হিংস্রতার ভিত্তিতে বিভক্ত করে ফেলবে।
এর আগে গত সপ্তাহে আমেরিকার কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিও এ যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বজায় না রাখার অনুরোধ করেন। বলেন তাকে যেন পুনরায় ট্রায়ালের সুযোগ দেওয়া হয়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনগুলো মীর কাসেমের বিচার নতুন করে করার দাবি জানিয়ে আসছে। এর মধ্যে আইনজীবীকে তার মামলা সম্পর্কে জানার জন্য আরো বেশি সময় না দেওয়া এবং সাক্ষীদের সংখ্যা ও প্রমাণ উপস্থাপন করতে না দেওয়ারও অভিযোগ তোলা হয়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একজন কর্মকর্তা চম্পা প্যাটেল বলেন, শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অনেক প্রশ্নবিদ্ধ। মৃত্যুদণ্ডের মতো নৃশংসতা এবং অপরিবর্তনীয় সাজা আরো বেশি বিচারহীনতাকেই প্রকাশ করে। যারা ওই সময়ে বিভৎসতার শিকার হয়েছে তাদের আরো ভালো বিচার পাওয়া উচিত।
বিবৃতিতে মীর কাসেমের ছেলে মীর আহমেদ বিন কাসেমের ভাগ্য নিয়েও নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গত ৯ আগস্ট কোনো রকম ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তার হন তিনি এবং তখন থেকেই কারাগারে বন্দী। তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ নেই বলেই উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
গতকাল মঙ্গলবার মানবতাবিরোধী অপরাধে অপরাধী মীর কাসেম আলীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। এরপরে প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে যে কোনো সময় কার্যকর করা হবে তার ফাঁসি।
জামায়াতের অন্যতম প্রধান অর্থ যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত মীর কাসেম আলীর
বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী
অপরাধের ১৪টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে ট্রাইব্যুনালের
দেওয়া রায়ে ১০ টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে দুটি
অভিযোগে।