জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন: এ মামলা মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক। দুদকের আইনগত কর্তৃত্ব ও এখতিয়ারের বাইরে। মামলায় দুদকের স্ববিরোধী বক্তব্যে ভরপুর। ।
বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টায় তিনি বক্তব্য শুরু করেন। তবে অর্ধেক বলে বক্তব্য শেষ করার পর অন্যদিন দেয়ার সময় চাইলে তা স্থগিত করা হয় দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে। পরবর্তী বক্তব্যের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার ২৬ তারিখ আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্যের সময় দেয়া হয়েছে।
বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন: মামলায় বিচারের নামে দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি ও হেনস্থার শিকার হচ্ছি। আমার স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যাহত হচ্ছে। পুরো দেশকে বিশাল কারাগার বানানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন: সবখানে চলছে চরম অনিরাপত্তা। মিথ্যা ও সাজানো মামলায় বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী বন্দি। আইনের শাসন ভুলণ্ঠিত। দলের ৪ লাখের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ২৫ হাজার মামলা হয়েছে। নির্যাতন ও গুম, খুন ও গ্রেফতারের ভয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এখন সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বড় বেশি বলা হয়। কিন্তু কোথায় আজ সংবিধানের শাসন?
খালেদা জিয়া বলেন: আমাদের সংবিধান নাগরিকদের যে অধিকার দিয়েছে তা কোথায়? কোথায় সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার? আমি নিজেকে একজন সামান্য মানুষ বলে মনে করি। তবে দেশ জাতির স্বার্থ ও কল্যাণে আমার জীবনের সীমিত, শক্তি সামর্থ্য মেধা ও জ্ঞানকে উৎসর্গ করেছি।
‘আমি বিশ্বাস করতে চাই, এ আদালত আইনের দ্বারা পরিচালিত। আপনি স্বাধীনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’
এর আগে এক লাখ টাকার বন্ডে দুজন জামিনদার থাকবেন এবং বিদেশে যাবার সময় আদালতের অনুমতি নিয়ে যাবেন এ শর্তে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দুটি মামলায় জামিন দেন বিশেষ আদালত।
বৃহস্পতিবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন নিতে আসলে শুরুতে এ জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
জামিন দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সহ উপস্থিত বিএনপি নেতা ও আইনজীবীদের বেশ উৎফুল্ল দেখা যায়।
১২ অক্টোবর আদালতে হাজির না হওয়ায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুই মামলায়ই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ আদালত।