মার্গারিটা মামুনের রিদমিক জিমন্যাস্টিকস-উইমেন’স ইভেন্টে স্বর্ণ জয়ে বাঙালিরা পুলকিত হতে পারি কিন্ত উৎসব করতে পারি না এমন মন্তব্য করেছেন ক্রীড়া বিশ্লেষক ফরহাদ টিটো।
তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেন, রিটা মানে মার্গারিটা মামুনের জন্ম যদি মস্কোতে না হয়ে রাজশাহী বা ঢাকায় হতো, তার বেড়ে ওঠা আর জিমন্যাস্টিকস শেখাটা যদি বাংলাদেশে হতো… তারপর তার বাবার জন্মস্থান যদি রাশিয়া হত এবং সে কারণে বাংলাদেশকে অবজ্ঞা করে রাশিয়ার হয়ে অলিম্পিকে অংশ নিতেন আর সোনার পদক জিততেন – তখন বাংলাদেশ তো বড় ধরণের দুঃখই পেতো !
যে মেয়েটার মন-প্রাণ জুড়ে রাশিয়া (সংগত কারণে ধরে নেয়া যায়) যার জন্মভূমি রাশিয়া, যার মায়ের দেশ রাশিয়া সে যদি বাংলাদেশের হয়ে অলিম্পিক মেডাল জিতত তাহলে রাশিয়াও নিশ্চিত আনন্দিত হত না, রিটাও নিশ্চই ততোটা গর্ব অনুভব করতেন না ।
রিটার বাবা মামুন সাহেব জন্মগত বাংলাদেশি বলে তিনি তো চাইবেনই মেয়ে তার মাতৃভূমির প্রতিনিধিত্ব করুক। কিন্তু কাগজে-কলমে রাশিয়ান-বাংলাদেশি হলেও রিটার দেশ তো রাশিয়াই। মামুন সাহেব যদি অলিম্পিয়ান হতেন তখন সব বিবেচনাতেই বাংলাদেশ তার প্রথম দেশ হত, তাকে ছেড়ে দিয়ে রাশিয়া মনে হয় পস্তাতো না, বাংলাদেশ তাকে পেয়ে কখনোই ভাবতো না একজন ‘বিদেশী’র হাতে দেশের পতাকা উঠেছে।
মার্গারিটা বাংলাদেশের মেয়ে না, বাংলাদেশির মেয়ে এই সত্যটা মেনে নিতে আমাদের কষ্ট হওয়া উচিত না। জনসংখ্যার হিশেবে বাংলাদেশ তো দুনিয়ার প্রথম সারির তাহলে নিজের মাটিতে জন্ম নেয়া, নিজ ভূখন্ডে বেড়ে ওঠা একজন বিশ্বজয়ী খেলোয়াড় কেন গড়ে তুলতে পারবে না দেশ ?
কেন অন্য দেশে জন্ম নেওয়া, অন্য সংস্কৃতিতে গড়ে ওঠা একজনকে নিজের মনে করে, তার সাফল্যকে নিজের মনে করে আনন্দে ভাসতে হবে !
অবশ্যই পিতার পরিচয় সুবাদে ‘The Bengal Tiger’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা মার্গারিটার সাফল্যে আমরা পুলকিত হতে পারি.. তবে উৎসব করতে পারি না, এত বছর ধরে অলিম্পিকে অংশ নিয়ে পদকের ধারে-কাছে যেতে না পারার অক্ষমতা ও লজ্জা ঢাকতে পারি না ।