বিশ্বজুড়েই বিভিন্ন স্থানে ধর্মকে ব্যবহার করে চলছে সহিংসতা। কোথাও আবার ধর্মের নামে চলছে রাজনীতি, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সৃষ্টি করা হচ্ছে বিভেদ। বাংলাদেশেও সম্প্রতি ধর্মের নামে বিদ্বেষ ছড়ানোর প্রবণতা দেখা দিচ্ছে।
কানাডায় মুসলিম বিরোধী প্রচারণার অভিযোগে বিচারাধীন এরিক ব্রাজোকে নিয়ে আদালত ও কানাডাবাসীর ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন প্রবাসী সাংবাদিক শওগত আলী সাগর। বাংলাদেশে কিছু কিছু মানুষের ধর্মান্ধতার সঙ্গে কানাডার ওই ঘটনার তুলনা করে তিনি লিখেছেন, ‘এরিক ব্রাজোর কোর্ট ডেট ছিলো আজ। মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগে গত সপ্তাহেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। আজ কোর্টে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ফেসবুকে একটি ইভেন্ট পেজ খুলে তার বন্ধুরা। তারা ঘোষণা দেয়, তারা আজ কোর্টে সমবেত হবে, সেখান থেকে যাবে ডাউন টাউনের মসজিদে। সেখানে তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করবে।
ফেসবুকের ইভেন্ট পেজটা নজর কাড়ে শহরের অমুসলিমদের। দ্রুত তারা সংগঠিত হতে থাকে। হাতে লেখা কিছু প্ল্যাকার্ড, পোষ্টারও বানিয়ে ফেলে তারা। প্রায় ৩০/৪০ জনের মতো গিয়ে হাজির হয় মসজিদের সামনে।
‘মুসলমানরা আমার ভাই’ এমন একটি বক্তব্য সম্বলিত পোষ্টার সেটে দেয় মসজিদের গায়ে। দ্রুত খবর চলে যায় ‘মুসলিম বিরোধীদের’ কাছেও। তারা মসজিদের সামনের কর্মসূচী বাদ দিয়ে কেটে পড়ে। শহরজুড়েই ঘটনাটা আলোড়ন তুলে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মুসলমানদের পক্ষে দাড়িয়ে যায়। চার/পাঁচ বছরের এক শিশু তার বাবা মার সাথে আসে মসজিদে। তার বুকে ঝুলানো একটি পোষ্টার- তাতে লেখা- ‘মাই বেষ্ট ফ্রেন্ড ইজ অ্যা মুসলিম। ‘মানবতাবোধ এভাবেই হটিয়ে দেয় ধর্মবিদ্বেষী কিছু অসুস্থ মানসিকতার লোকের উন্মাদনাকে।
ডাউনটাউনের এই ঘটনা কতগুলো প্রশ্ন মনকে আলোড়িত করে। কানাডায় মুসলমানরা সংখ্যালঘু। সংখ্যালঘুদের পাশে কি আন্তরিকতা নিয়ে, মানবিকতা নিয়ে এসে দাড়িয়েছে সংখ্যাগুরু অমুসলিমরা। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পাশে কখনো কি মুসলমানরা এভাবে দাড়িয়েছে?
ওয়াজ মাহফিলের নামে অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে যে ঘৃণা বিদ্বেষ ছড়ানো হয় কেউ কি সেখানে দাড়িয়ে বলেছে ওরাও আমার ভাই, এভাবে বলা যাবে না। মুসলমানরা কবে এইভাবে সংখ্যালঘুদের জন্য মানবিকতাবোধ নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াবে? কবে?’