চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মন্ত্রীর বাড়ি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা

মৎস্য ও প্রাণীসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের মৃত্যুর পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় রয়েছে তার বাড়ি। মন্ত্রী হলেও যার বাড়িতে কোনো জৌলুশ নেই, নেই আভিজাত্য।

এই বিষয় নিয়েই এবার ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শেখ আদনান ফাহাদ। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ছায়েদুল হকের জীবনের উপর স্পেশাল স্টোরি করতে পারে সংবাদমাধ্যমগুলো। কত জনকে দেখলাম, চেয়ারম্যান হয়েই আলিশান বাড়ি বানিয়ে ফেলে, গাড়ি করে ফেলে। কত এমপি দেখলাম, জনগণের কষ্টের দিকে কোন খেয়াল নাই, নিজে বিশাল বাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন, ছেলে-মেয়ে-বউ দুই হাতে কামাচ্ছেন। কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ছায়েদুল হক ৫ বারের এমপি, একবার মন্ত্রী। দুইটা টিনের ঘর আছে তার। সর্বশেষ উনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছিল। নিজেদের লোকেরাই তাকে বিপদে ফেলতে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। উনি মিডিয়াকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ প্রমাণ করতে। মিডিয়া করেনি। ছায়েদুল হককে বলা হয়েছিল, প্রেস কনফারেন্স করতে। উনি বলেছিলেন, আল্লাহর বিচার আছে, সত্য কেউ চাপা দিয়ে রাখতে পারবে না। এমন আদর্শবান মানুষের উপর যত বেশি রিপোর্ট হবে তত দেশের মানুষ জানবে, রাজনীতিবিদদের মধ্যে সৎ মানুষও আছে।

একাত্তর টেলিভিশনের বার্তা পরিচালক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা তার ফেসবুকে লিখেছেন সেই বাড়িটি নিয়ে।

সেখানে তিনি লিখেছেন, সম্প্রতি ব্রাহ্মবাড়িয়া গিয়েছিলাম। পুরো শহরটি জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। সারাদেশে যে এত উন্নয়ন হচ্ছে তার কোন ছোঁয়া যেন নেই এখানে। দায়িত্বে থাকা কারো কারো পারদর্শিতা সাংবাদিকদের গালিগালাজেই। এর মধ্যে এই জেলার সবচেয়ে প্রবীণ রাজনীতিক, মন্ত্রী ছায়েদুল হকের মৃত্যু সংবাদ এলো। পাঁচবার এমপি হয়েছেন। একবার পুরো চট্টগ্রাম বিভাগেই একজন মাত্র নৌকার বিজয় ছিল এবং সেটি এই মানুষটার। অতি সাধারণ জীবন যাপন ছিল। মন্ত্রী, এমপিদের পুত্র, আত্মীয়দের দাপট নিয়ে অনেক কথা শুনি। ছায়েদুল হকের ছেলে আছে। আমি আজ পর্যন্ত কোন বাজে কথা শুনিনি। তিনি মন্ত্রী হয়ে গম লুট করেননি, পঁচা গমও আমদানি করেননি, চাল নিয়ে চালবাজি করেননি, মামলা বা জামিন ব্যবসা করেননি। যা অনেক এমপি, মন্ত্রী বা তাদের আত্মীয়দের পারিবারিক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। কতকগুলো পরগাছা একবার এমপি -মন্ত্রী হয়ে যেভাবে আত্মীয় স্বজনকে কোটিপতি করে দিয়েছেন তা তিনি করতে পারেননি। নাসিরনগরের সাম্প্রদায়িক হামলা দু:খজনক এবং এটা যে তাঁকে ফাঁসাতে ঘটানো হয়নি সে নিশ্চয়তাও পওয়া যাচ্ছেনা। তিনি ‘মালাউন’ বলেছেন তাও প্রমাণিত নয়, যে ভিডিও ক্লিপটির বদৌলতে এটি বলা হয় সেখানও তা স্পষ্ট নয়, আমার নিজের মনেও সংশয় ছিল। গণমানুষের নেতা ছিলেন, গণমানুষই তাকে বারবার নির্বাচিত করেছে এবং সুসময়ে নয় কঠিন সময়ে। তিনি কপট নাগরিক রাজনীতিক ছিলেননা-এটাই তার বড় দুর্বলতা ছিল।

ছায়েদুল হকসাংবাদিক হাবিবুর রহমান তার ফেসবুকে লিখেছেন, নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের পূর্বাভাগ গ্রামের উত্তরপাড়ায় রয়েছে দুটি টিনের ঘর। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া দুটি টিনের ঘরই ছিল তার সম্বল। দীর্ঘদিনের পুরোনো দুই ঘরের একটিতে থাকতেন সততার প্রতীক প্রয়াত মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হক, অন্যটি ছিল তার বৈঠকখানা। বাড়িতে এলে ওই টিনের ঘরে পুরনো খাটেই ছায়েদুল হক ঘুমাতেন বলে জানিয়েছেন তার নিকট আত্মীয়রা।

আলামিন মিয়া নামে একজন ফেসবুকে ছায়েদুল হকের বাড়ির ছবি দিয়ে লিখেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীর বাড়ী, জনাব এ্যাড ছায়েদুল হকের বাড়ি।