আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সামরিক বিভাগের ‘আইটি প্রধান’ আশফাক উর রহমান নাস্তিক ব্লগারদের সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন সাইটের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করার কাজ করতো। পরে ওইসব অ্যাকাউন্টে থাকা ব্যক্তিগত তথ্যের ভিত্তিতে তাদের নাম চলে যেতো হিট লিস্টে। এরপর পরিকল্পনা করে আক্রমণ করা হতো।
রাজধানীতে আটক হওয়া এবিটির ‘আইটি প্রধান’ আশফাক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানিয়েছেন বলে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
মনিরুল ইসলাম বলেন, পলাতক জঙ্গি মেজর জিয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং এবিটির আইটি শাখার প্রধান এই আশফাক।জঙ্গি জিয়ার সরাসরি তত্ত্বাবধানে ‘দাওয়া ইল্লাল্লাহ’ নামক ওয়েব পেজে ধর্মীয় উগ্রবাদ সম্বলিত বিভিন্ন আর্টিকেল নিয়মিতভাবে আপলোড করতেন তিনি। তার আসল নাম আশফাক উর রহমান ওরফে অয়ন। বিভিন্ন সময়ে তিনি আরিফ বা অনিকও ব্যবহার করতেন।
‘তার কাজ ছিলো নাস্তিক ব্লগারদের বিভিন্ন পোস্ট ও এক্টিভিটিস দেখে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম যেমন-ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা। এরপর ওইসব অ্যাকাউন্টের ভিতরে ঢুকে বাসার ঠিকানা, কর্মস্থল ইত্যাদি ব্যক্তিগত তথ্য বের করে তাদেরকে টার্গেট করার কাজ করতেন তিনি।এরপর হিটলিস্টে তাদের নাম চলে যেতো।’
তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে পড়াকালীন সময়ে আনসার আল ইসলাম (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) বা এবিটি এর সাংগঠনিক কাযক্রম শুরু করে আশফাক। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে সে সংগঠনটির সামরিক বিভাগে যোগদান করে।
বহুল আলোচিত জঙ্গি মেজর জিয়ার অধীনে ও পরিচালনায় রাজধানীর উত্তরা ও পল্লবীর কালাপানি এলাকায় নাস্তিক ব্লগার হত্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশ নেন তিনি।এর পর সংগঠনের সামরিক বিভাগের আইটি শাখার প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন।মুসলিমদের রক্তের পবিত্রতা, স্পেন বিজয়ে তারিক বিন জিহাদের বক্তব্য, আমেরিকার জুলুমসহ ধর্মীয় উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধকরণ সম্পর্কিত বিভিন্ন লেখনি বাংলায় অনুবাদ করে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করতেন তিনি।
ছবি: রণ মাহমুদ