প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় সমুদ্রে ডুবে যাওয়া একটি জার্মান সাবমেরিন এক শতাব্দী পর উত্তর সাগরে পাওয়া গেছে। এই সাবমেরিন আবিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধারণা, এর ভেতর এখনও ২৩ জনের দেহাবশেষ থাকতে পারে।
ইউবি-টু মডেলের ওই সাবমেরিন বেলজিয়ান উপকূল থেকে একটু দূরে সমুদ্রপৃষ্ঠের ৩০ মিটার গভীরে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সাবমেরিনটি বেশ অক্ষত অবস্থায় আছে বলেও জানান তারা।
বেলজিয়ামের ওয়েস্ট ফ্ল্যান্ডার্স প্রদেশের গভর্নর কার্ল ডেকালুওয়ে বলেন, ‘সাবমেরিনটি এতটাই ভালো অবস্থায় রয়েছে যে, আমরা ধারণা করছি এর ভেতরে এখনও আরোহীদের মৃতদেহ রয়ে গেছে।’
বেলজিয়ামে জার্মান দূতাবাসকে এ ব্যাপারে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের ডেকালুওয়ে বলেন, ডানদিকে কাত হয়ে সমুদ্রের তলদেশে পড়ে থাকা ইউবি-টু মডেলের এই সাবমেরিন সাধারণত ২২ ক্রু ও একজন কমান্ডার নিয়ে চলাফেরা করে। ক্ষেত্রবিশেষে এর কমবেশি হয়।
ডয়চে ভেলে জানায়, তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থায় থাকলেও ডুবোজাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওপরের দিকে। ‘বো’ বা সামনের উপবৃত্তাকার অংশ সবচেয়ে বেশি বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে হ্যাচ বা ঢোকা-বের হওয়ার রাস্তাগুলো এরপরও বন্ধ ছিল।
এছাড়া সাবমেরিনের কনিং টাওয়ার (যে অংশ থেকে বাইরের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং সাবমেরিনের নিজস্ব গতিবিধির হিসেব রাখা হয়) এবং পেরিস্কোপ পুরোপুরি অক্ষত রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। সাবমেরিন ধ্বংসাবশেষের পাশে দু’টো টর্পেডো টিউব পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে ডুবোজাহাজটি মাইন বিস্ফোরণের কারণে ডুবে গিয়েছিল।
গভর্নর ডেকালুওয়ে বলেন, এতদিন সাবমেরিন আবিষ্কারের বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছিল যেন উৎসুক জনগণ ঘটনাস্থলের কাছাকাছি না আসতে পারে এবং পাচারকারীরা জাহাজটিকে ক্ষতিগ্রস্ত বা লুটপাট করতে না পারে। অবশ্য এখনও সাবমেরিনের অবস্থান কাউকে জানানো হয়নি।
ইউবি-টু মডেলের সাবমেরিনগুলো ১৯১৫ এবং ১৯১৬ সালে জার্মানিতে তৈরি হয়েছিল। ডুবোজাহাজগুলো প্রায় ৫০ মিটার গভীরে যাত্রা করতে পারত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের এই মডেলের ১১টি সাবমেরিন এখন পর্যন্ত বেলজিয়ান সমুদ্রসীমায় পাওয়া গেছে। তবে এবারের জাহাজটিই সবচেয়ে অক্ষতভাবে টিকে আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।