বিশ্বের একমাত্র টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) যেখানে প্রতি দলে পাঁচজন করে বিদেশি খেলতে পারে। তাতে দেশিদের লাভ আদৌ হয়েছে কিনা তার প্রমাণ টুর্নামেন্ট শেষে ক্রিকইনফো নির্বাচিত সেরা একাদশ। যে দলে জায়গা হয়েছে কেবল চার বাংলাদেশির। অনুমিতভাবে অধিনায়ক রাখা হয়েছে চ্যাম্পিয়ন দলের মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকে।
এক নজরে দেখা নেয়া যাক বিপিএল সেরা একাদশ
ক্রিস গেইল
পঞ্চম আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব। ১৭৬.৩৬ স্ট্রাইক রেটে রংপুর রাইডার্সকে শিরোপা জেতাতে মূল অবদান তার। ১১ ম্যাচে ৪৮৫ রান, যার মধ্যে দুই শতকে শেষ তিন ম্যাচে করেছেন ২৭৫!
এভিন লুইস
গেইলের পর কে টি-টুয়েন্টি মাতাবেন? গেইল নিজেই মাঝে মাঝে বলেন, তার পরের জায়গাটা নাকি এভিন লুইসের। এবং কেন হবেন সেটাই যেন বিপিএলে দেখিয়ে দিলেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৯৬ রান এসেছে ঢাকা ডায়নামাইটসের বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে।
মোহাম্মদ মিঠুন
পুরো বিপিএলেই দেশিদের মধ্যে সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যানটির নাম মোহাম্মদ মিঠুন। তবে সেরা একাদশে জায়গা হয়েছে মূলত উইকেটরক্ষক হিসেবে। কিন্তু ব্যাট হাতেও যে সমান সিদ্ধহস্ত মিঠুন তারই প্রমাণ দেন ১৫ ম্যাচে ৩২৯ রান করে। বিপিএল সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যানের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন রংপুর রাইডার্স উইকেটরক্ষক।
সিকান্দার রাজা
টি-টুয়েন্টি ব্যাটসম্যানের তকমা নেই নামের পাশে। মূলত অলরাউন্ডার হিসেবেই চিটাগং ভাইকিংসে জায়গা পেয়েছিলেন সিকান্দার রাজা। কিন্তু ১১ ম্যাচে ১৫৩.৫৯ স্ট্রাইক রেটে ২৭৮ রান করে জিম্বাবুইয়ান তারকা ঢুকে গেছেন সেরা একাদশে।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
এবারের বিপিএলে অন্যতম সেরা দেশি খেলোয়াড় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তরুণদের নিয়ে গড়া এক দলকে নেতৃত্ব দিয়ে তুলেছেন সেরা চারে। ব্যাট হাতেও সমান মাহমুদউল্লাহ। ১২ ম্যাচে ১৩০ স্ট্রাইকরেটে ৩১২ রান খুলনা টাইটানস অধিনায়কের।
কার্লোস ব্র্যাথওয়েট
স্লগ ওভারে খুলনা টাইটানসের ভরসা ছিলেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার। সময়ের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার ১২ ম্যাচে ২৫০ রান করেছেন। বেশি দক্ষতা দেখিয়েছেন স্লগ ওভারে। স্ট্রাইকরেট ১৮৫.১৮!
সাকিব আল হাসান
বিপিএলের সেরা বোলার বাংলাদেশ দলের টেস্ট ও টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক। কিপটে বোলিংয়ে ১৩ ম্যাচে ২২ উইকেট শিকার করেছেন সাকিব। ব্যাট হাতে আছে ২১১ রান। ঢাকা ডায়নামাইটসকে নেতৃত্ব দিয়ে তুলেছেন ফাইনালে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলকে জেতানো হয়নি শিরোপা।
সুনিল নারাইন
ব্যাটে আগুন ঝরিয়েছেন। বল হাতেও খুব একটা খারাপ ছিলেন না সুনিল নারাইন। ওভার প্রতি ৪.৯৫ গড়ে ১১ উইকেট নিয়েছেন ক্যারিবীয় তারকা। ১২ ম্যাচে করেছেন ২০০ রান। তাই সেরা একাদশে জায়গা পেতে কষ্ট হয়নি তার।
মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা
পাঁচ বিপিএলের চারটিই জিতেছেন তিনি। রংপুরকে প্রথমবারের মতো ফাইনালে নিয়ে জিতিয়েছেন শিরোপাও। মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার কাঁধেই সেরা একাদশের নেতৃত্বভার রাখতে পছন্দ করছে ক্রিকেটবিষয়ক সংবাদ মাধ্যম ক্রিকইনফো। ম্যাচ ১৪ ম্যাচে নিয়েছেন ১৫ উইকেট।
হাসান আলি
৯ ম্যাচে ১৬ উইকেটই বলে দেয় পাকিস্তানি পেসার কতটা ভীতি ছড়িয়েছেন উইকেটে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে শীর্ষে রেখে শেষ চারে আনতে হাসানের অবদান অনেকখানি।
রশিদ খান
পুরো টুর্নামেন্ট খেলা হয়নি আফগান লেগির। কিন্তু যতদিন খেলেছেন আলো ছড়িয়েছেন। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কিপটে বোলিং গড় তার নামের পাশে। ৭ ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছেন রশিদ। কিন্তু ওভার প্রতি মাত্র ৪.৪৬ রান দিয়েছেন।
সেরা একাদশের বাইরে দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে জায়গা পেয়েছেন চিটাগং ভাইকিংসের লুক রনচি। সেরা কোচ চ্যাম্পিয়ন দলের টম মুডি।