সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপরেখা বাস্তবায়িত হলেও উন্নত বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি দক্ষতার তুলনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে বলে মনে করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিকসের মতো প্রযুক্তির বৈশ্বিক অগ্রগতির বিচারে নিজেদের আপাতত ‘অশিক্ষিত’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এই অশিক্ষা দূর করতে প্রযুক্তি শিক্ষকের প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন: তৈরি পোশাক শিল্পের মতো আইসিটি খাত দেশকে নতুন স্বর্ণ শিখরে পৌঁছে দেবে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা বাড়াতে হবে। এই দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে আগামী প্রজন্ম। প্রজন্মকে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ হিসেবে তৈরি করতে আমাদের প্রথম যা দরকার, তা হলো প্রযুক্তি শিক্ষক। যারা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে জানে না, তারা কিভাবে প্রজন্মকে শিক্ষিত করবে?
এজন্য প্রয়োজনে উন্নত দেশ থেকে শিক্ষক এনে তরুণদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত তিন দিনের বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো ২০১৭ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন পরিকল্পনা মন্ত্রী। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনিএসব কথা বলেন। যৌথভাবে এই প্রযুক্তি প্রদর্শনী আসরের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস)। অনুষ্ঠানের সভাপতি সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন: বাংলাদেশে প্রতি বছর সাড়ে তিন কোটি মোবাইল সেট, ৫ লাখের বেশি ল্যাপটপ ও ২০ লাখের বেশি ফ্রিজ আমদানি হয়। সরকার নীতিমালা পরিবর্তন করে এই তিনটিসহ ৯৪টি পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে এক শতাংশ করেছে। ফলে এগুলোর উৎপাদন শুরু হচ্ছে দেশেই। দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন ও সিম্ফোনি দেশেই প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন করছে।‘স্যামসাং ও এলজি’র মতো প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্ট স্থাপন করছে। এই তিনটি পণ্যে দেশে ৩০০ কোটি ডলারের বাজার রয়েছে। ২০১৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে ৫০০ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এইসব প্রযুক্তি পণ্য ও সফটওয়্যার সেবা রফতানি করে তা আয় করা সম্ভব হবে। আমাদের বিশ্বাস, ২০২১ সালের মধ্যেই হার্ডওয়্যার রপ্তানি করবে বাংলাদেশ। হার্ডওয়্যার খাতে সক্ষমতা বাড়াতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, আইসিটি সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইমরান আহমেদ, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি আলী আশফাক প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন রাশিয়া, তাইওয়ানসহ কয়েকটি দেশের বিদেশি প্রতিনিধি, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তি এবং শিক্ষার্থীরা।