কতটা অপেক্ষা করা যায়? কারো বা কোনো কিছুর জন্য হলে অনেকেই হয়তো বলবেন- সারাটা জীবন! কিন্তু টেস্ট অভিষেকের জন্য? অ্যাডাম ভোজেস ৩৫ বছর অপেক্ষার পর টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। পরে অভিষেকেই সেঞ্চুরি করে জ্বালা মিটিয়েছেন। এরপরও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাগি গ্রিন ক্যাপটা ২০ টেস্টের বেশি মাথায় চড়ানোর সুযোগ মেলেনি। স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের পর টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গড়ের মালিক অপেক্ষাটা আর দীর্ঘ করলেন না। বললেন- অনেক হয়েছে, এবার বিদায়! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায়।
ঘরোয়া ক্রিকেটে দেশে-বিদেশে রানের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকদের নজর কাড়তে পারেননি। উপেক্ষার পর উপেক্ষায় দমেও যাননি। অবশেষে সুযোগটা আসে ২০১৫ সালে। ততদিনে বয়সটা ৩৫-এর ঘরে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই টেস্টে অপরাজিত ১৩০ রান করে সবচেয়ে বেশি বয়সে অভিষিক্ত হয়ে সেঞ্চুরি করার রেকর্ডে নাম লেখান।
এরপর খেলতে পেরেছেন আর মাত্র ২০টি টেস্ট। গত বছরের নভেম্বরে হোবার্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সাদা পোশাকে শেষবার খেলেছেন ৩৭ বর্ষী ব্যাটসম্যান। টেস্টে ক্যারিয়ার গড় ৬১.৮৭! কমপক্ষে ২০ ইনিংস খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। খোলাসা করে বললে, স্বদেশি কিংবদন্তি স্যার ব্র্যাডম্যানের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গড় তার। ক্রিকেটের অতিমানব ব্র্যাডম্যান ৮০ টেস্টে ৯৯.৯৪ গড় রেখে না ফেরার দেশে গেছেন।
সব ফরম্যাট মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে ৫৮টি ম্যাচ খেলেছেন ভোজেস। প্রধানমন্ত্রী একাদশের অধিনায়ক হয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষবার কোনো আন্তর্জাতিক দলের বিপক্ষে নামবেন বুধবার। ক্যানবেরায় হবে ম্যাচটি। ওই ম্যাচের পরই তাকে আর কোনো আন্তর্জাতিক দলের বিপক্ষে নামতে দেখা যাবে না বলে জানিয়েছেন অজি ব্যাটসম্যান, ‘এটাই আমার শেষ। এ পর্যন্তই ছিল। আমি এখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। সামনে তাকাতে চাই।’ ভোসেসের বিদায়ের ভাষার সুরই বলে দিচ্ছে, কতটা অভিমান নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনকে বিদায় বলছেন তিনি!
ভোজেস ২০১৩-এর পর আর ওয়ানডে-টি টুয়েন্টি খেলার সুযোগ পাননি। ৩১ ওয়ানডেতে ৪৫.৭৮ গড়ে ৯৯৮ রান। ১ সেঞ্চুরির সঙ্গে চার ফিফটি। সর্বোচ্চ ইনিংসটি অপরাজিত ১১২ রানের। ৭ টি-টুয়েন্টিতে সেখানে আছে একটি ফিফটি। টেস্টে ওই ২০ ম্যাচেই ৫টি শতক ও ৪টি অর্ধশতক করেছেন। সাদা পোশাকে সর্বোচ্চ ইনিংসটি অপরাজিত ২৬৯ রানের। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৯৯ ম্যাচে ভোজেসের দখলে ১৩ হাজারের ওপর রান। ৪৭-এর ওপর গড়ের সঙ্গে আছে ৩২টি সেঞ্চুরি ও ৬৮ ফিফটি।