চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বিটকয়েন লেনদেনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কতা

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অনলাইনভিত্তিক ভার্চুয়াল মুদ্রা বিটকয়েন সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব মুদ্রায় লেনদেন করা থেকে বিরত থাকার জন্য সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হয়েছে। এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সতর্কতা জারি করে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, এটি বৈধ মুদ্রা নয়। তাই সবাইকে সচেতন থাকার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে।

বিটকয়েন হচ্ছে একটি ভার্চুয়াল সাংকেতিক মুদ্রা। এটি লেনদেন হয় ওপেন সোর্স ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রোটোকলের মাধ্যমে। এর লেনদেনের জন্য কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যাংকের প্রয়োজন হয় না। যার ফলে একে নিয়ন্ত্রণ করার কোনও সংস্থাও পৃথিবীতে নেই। ফলে এ ধরনের মুদ্রায় লেনদেন ঝুঁকিপূর্ণ।

সম্প্রতি ব্রাজিল, ভারতসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশেও বিটকয়েন বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে দেশে বিটকয়েনের লেনদেন হচ্ছে, যা কোনও নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত নয়। ফলে মানুষের আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এ ধরনের অবৈধ মুদ্রার লেনদেন থেকে বিরত থাকতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, রিপ্পেল ও লিটকয়েনসহ বিভিন্ন বিনিময় প্ল্যাটফর্মে লেনদেন হচ্ছে। এসব ভার্চুয়াল মুদ্রা কোনও দেশের বৈধ কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা বৈধ মুদ্রা নয়। ফলে এর বিপরীতে কোনও আর্থিক দাবির স্বীকৃতিও নেই। ভার্চুয়াল এসব মুদ্রার লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য কোন নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদিত না হওয়ায় তা আইন দ্বারা সমর্থিত নয়।

নামবিহীন বা ছদ্মনামে প্রতিসঙ্গীর সঙ্গে অনলাইনে ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেনের দ্বারা মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সম্পর্কিত আইনের লঙ্ঘন হতে পারে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনলাইন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেনকারী গ্রাহকরা ভার্চুয়াল মুদ্রার সম্ভাব্য আর্থিক ও আইনগত ঝুঁকিসহ বিভিন্ন ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন। এসব ঝুঁকি এড়াতে বিটকয়েনে লেনদেন বা এসব লেনদেনের প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

২০০৯ সালে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামের কেউ কিংবা একদল সফটওয়্যার ডেভেলপার নতুন ধরনের ভার্চুয়াল মুদ্রা বা ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’র প্রচলন করে। নাকামোতোর উদ্ভাবিত সেই ক্রিপ্টোকারেন্সির নাম দেওয়া হয় বিটকয়েন।

ইলেকট্রনিক মাধ্যমে অনলাইনে দু’জন ব্যবহারকারীর মধ্যে এটি সরাসরি (পিয়ার-টু-পিয়ার) আদান-প্রদান হয়। লেনদেনের নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করা হয় ‘ক্রিপ্টোগ্রাফি’ নামের পদ্ধতি। নিজের পরিচয় প্রকাশ না করেই এই পদ্ধতিতে লেনদেন করা যায়। লেনদেনে ব্যয়ও খুব কম।

সম্প্রতি বিটকয়ন মুদ্রাটি আলোচনায় উঠেও এসেছে এ কারণেই। গত এক বছরে এই ভার্চুয়াল মুদ্রাটির দাম হু হু করে বেড়েছে।

জানা গেছে, বিটকয়েনের চাহিদা এবং মূল্য লাগামহীনভাবে বাড়ছে। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ডলারের বিপরীতে ১টি কয়েনের বিনিময় মূল্য ৪১৯ দশমিক ৭৫ ডলার থাকলেও এ সপ্তাহে এর বিনিময় মূল্য ছিল ১৪৩১৭ দশমিক ৮৬ ডলার। দেড় বছরে দাম বেড়েছে প্রায় চারগুণ। বাংলাদেশি টাকায় একটি বিটকয়েনের দাম এখন প্রায় ১২ লাখ টাকা।