সরকারি সহযোগিতায় তাঁতের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন এনেছেন হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পাহাড়ি এলাকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষেরা। আগে নিজেদের পরার কাপড় বুনতেই ব্যস্ত থাকতেন ওই জনগোষ্ঠীর নারীরা, এখন প্রশিক্ষণ ও ঋণ নিয়ে কাপড় বুনে বাজারজাতকরণের স্বপ্নে বিভোর তারা।
হবিগঞ্জ থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে বাহুবল উপজেলার প্রত্যন্ত জনপদ কালিগজিয়া। ওই পাহাড়ি এলাকাটিতে বসবাস সহস্রাধিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের। পুরুষরা কৃষির পাশাপাশি কাজ করেন বনরক্ষীর।
নারীরা সংসারের পাশাপাশি তাঁতে বুনেন নিজেদের পরার কাপড়। তবে এখন দিন বদলেছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা এগিয়ে যাচ্ছেন কাপড় বাজারজাত করতে।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কয়েকজন নারী বলেন, নিজে হাতে তৈরি করি, নিজে পড়ি। মাঝেমধ্যে ওড়না, চাদর বিক্রি করি। আমরাতো বেকার মহিলা। এই কাজ শিখলে আয় করতে পারবো এর মাধ্যমে। আমরা ১৫ দিন প্রশিক্ষণ নিসি।
তৃণমূলের এই নারীরা জীবনমান উন্নয়নে গড়ে তুলেছেন সমবায় সমিতি। সমিতির সভাপতি-সেক্রেটারি বলেন, ভবিষ্যতে আমাদের জন্য খুব ভালো হবে। আমরা যেনো আরও কাজ পাই। আরও কাজ দেখাতে পারি। বাজারজাত করতে পারি। যদি প্রশিক্ষণ পাই অনেক কিছুই করা যায়। শাড়ি গামছা সবকিছুই আমরা বাজারজাত করতে পারবো।
এই কাজে তাদের সহায়তা করতে একটি প্রকল্পও হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার। আদি তাঁত শিল্পীদের পাশাপাশি মৃৎশিল্পীদেরও অন্তর্ভূক্ত করা হবে ওই প্রকল্পে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য কেয়া চৌধুরী বলেন, দুঃখজনক হলো যুগ যুগ ধরে পারিবারিকভাবে এই পেশার সাথে যুক্ত হলেও তারা সরে এসেছেন এই পেশা থেকে। নারীদেরকে এই পেশায় নিয়ে এসে আমাদের ঐতিহ্যের দিকটিকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারি। মৃৎ শিল্প, তাঁত শিল্পকে যথেষ্ট সমৃদ্ধ একটি শিল্প করা যেতে পারে।
সরকারের এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে আরো এগিয়ে যাবেন কালিগজিয়ার পাহাড়ি এলাকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষেরা।