প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে সব মানুষকে একসময় চলে যেতে হয়। এই চলে যাওয়া অবশ্যই কষ্টের, তবে কিছু মানুষের চলে যাওয়ার ক্ষতি কখনোই পূরণ হওয়ার নয়। এমনই একজন গুণী মানুষ বারী সিদ্দিকী। লাখো শ্রোতার হৃদয়ের মনিকোঠায় তিনি ছিলেন লোকগানের অপার ভাণ্ডারে একখণ্ড হীরকের মতো জ্বলজ্বলে। এই গুণী ব্যক্তিত্বের সঙ্গে চ্যানেল আইয়ের অনেক গভীর সম্পর্ক ছিল। ইমপ্রেসের মাধ্যমে প্রথম তার কণ্ঠের যাদুর কথা জেনেছিলো মানুষ, শেষ অনুষ্ঠানও করেছেন চ্যানেল আইয়ে। শুধু গান নয়, বাঁশির জাদুকরী সুর তোলার ক্ষেত্রেও বারী সিদ্দিকী ছিলেন অতুলনীয়। তিনি বাঁশির সুর তুলতে এত ভালোবাসতেন যে, নিজের মৃত্যুর পরও বাঁশিকে আপন করে নিতে চেয়েছিলেন গানে গানে। কাজের প্রতি কতোটা ভালোবাসা থাকলে এমনটা সম্ভব তা সহজেই বুঝা যায়। নিজের কাজের প্রতি ভালোবাসার ক্ষেত্রে এখান থেকে নবীন শিল্পী থেকে শুরু করে সবার শেখার আছে বলে আমরা মনে করি। বারী সিদ্দিকী যে কতোটা জনপ্রিয় হয়ে তা তার অসুস্থতা এবং মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ মানুষের দুঃখগাথা ও হাহাকার দেখলেই বুঝা যায়। মানুষের শেকড়ের কথা তুলে ধরে তিনি লাখো শ্রোতার হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন। তবে এই গুণী শিল্পীর মরদেহ শহীদ মিনারে নেয়া হয়নি। এ কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অনেক ভক্তকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। আমরা মনে করি, সাধারণ মানুষের এই ক্ষোভ প্রকাশ অযৌক্তিক নয়। কারণ এই সম্মান এবং শ্রদ্ধা তার প্রাপ্য ছিল। বারী সিদ্দিকীর রেখে যাওয়া কাজগুলো ব্যাপকভাবে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে এখনও তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করি।