ছয় বছরের শিশু তাওসিফের অপহরণকারীদের সঙ্গে মেধাদীপ্ত আচরণেই তাকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেফতার করা সহজ হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শিশুটির বাবা মোমিন আহমেদ জানিয়েছেন, বাবা-মার ফোন নম্বর মুখে বলতে না পারলেও লিখতে পারে তাওসিফ।
ছয় বছরের শিশু তাওসিফের বাবার মোবাইল নম্বর মুখস্থ ছিল। অপহরনকারীরা তাওসিফকে বলেছিল, ‘আব্বুকে ফোন দাও তোমাকে বাসায় দিয়ে আসব’–চ্যানেল আই অনলাইনকে রোববার সন্ধ্যায় এমনটাই বলছিলেন তাওসিফের বাবা মোহাম্মদ মোমিন আহমেদ।
বয়সে ছোট্ট হলেও তাওসিফুর রাহিম অত্যন্ত মেধাবী, রোববার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে গণমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে মেধাদীপ্ত ভঙ্গিই সব বলে দিচ্ছিল।
তাওসিফের বাবা মোহাম্মদ মোমিন আহমেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, তাওসিফের আমার আর ওর মায়ের মোবাইল নাম্বার মুখস্থ। বলতে না পারলেও লিখতে পারে।
ছোট্ট তাওসিফের বুদ্ধিদীপ্ততার প্রশংসা সংবাদ সম্মেলনে নিজেই করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম।
শিশুটির মেধা অপহরনকারীদের গ্রেপ্তারে সহায়তা করেছে করেছে জানিয়ে তিনি বলেন: শিশুটি বাবার মোবাইল নম্বর মুখস্থ করে রেখেছিল। তার থেকেই নম্বর পেয়ে অপহরনকারীরা মুক্তিপণ চাইতে যোগাযোগ করে।
এছাড়াও সন্তানকে কিছু জরুরি বিষয় প্রতিটি অভিভাবকের শিখিয়ে রাখা দরকার বলেও পরামর্শ দেন তিনি।
শিশু তাওসিফকে উদ্ধারের সময় দায়িত্বরত ছিলেন গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার গোলাম সাকলায়েন, অল্পের জন্য গুলিবিদ্ধ না হলেও গুরুতর আহত হন তিনি।
গোলাম সাকলায়েন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: আমার একটি শিশু সন্তান রয়েছে, আমার স্যারের রয়েছে, আমরা সবাই শিশুটিকে অক্ষত উদ্ধারে মরিয়া ছিলাম। আমি আহত হওয়ার সময় সহকর্মীরা সাহায্যের জন্য আসতে চাইলে বলেছিলাম, আমার যা হবার হয়ে গেছে; কিন্তু আমাদের শিশুটিকে বাঁচাতে হবে, অপহরণকারীরা যেন পালাতে না পারে।
তবে রোববার দুপুরে ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে যেন ঘুরে ফিরেই আসছিল তাওসিফের বুদ্ধিদীপ্ত প্রশংসার কথা।
অনেক গণমাধ্যমকর্মী ও পুলিশ কর্মকর্তারা আলোচনা করছিল শিশুটি একটুও ভয় পায়নি, অচেনা পরিবেশ অচেনা মানুষ মোবাইলের দুই একটা ডিজিট ভুল হওয়া স্বাভাবিকই ছিল।
এক পুলিশ কর্মকর্তা বলছিলেন, শিশুটি যদি বাবার ফোন নাম্বার দিতে না পারত তাহলে উদ্ধারের সময় বাড়ত, উৎকণ্ঠাও বাড়ত। শিশুটির মেধা আমাদের উদ্ধার কাজ সহজ করে দিয়েছিল।
শনিবার ভোরে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগ ও গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের গুলশান জোনাল টিম যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত শিশু তাওসিফুর রাহিমকে উদ্ধারসহ তিন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে।