চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বাংলাদেশ নাইজেরিয়া হবে না, মিয়ানমারও হবে না

আবারো বিদ্যুতের দাম বাড়নো হচ্ছে। সোমবার থেকে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি হবে। ২০১০ সালের ১লা মার্চ থেকে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় বছরে পাইকারি পর্যায়ে পাঁচবার এবং খুচরা গ্রাহক পর্যায়ে সাতবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে।

সরকারের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতা অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এই শিক্ষক লিখেছেন,

“সরকার আবারও প্রথমে বিদ্যুৎ ও পরে গ্যাসের দাম বাড়ানোর আয়োজন করছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম যখন গত কয়বছরে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমেছে তখন এই পুরো সময় জুড়ে বাংলাদেশ সরকার তার দাম বাড়িয়েছে। এর ফলে অর্থনীতির সকল খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমছে এবং জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় ক্রমাগত বেড়েছে। সরকারের এই ভূমিকা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। দেশি বিদেশি কিছু গোষ্ঠীর স্বার্থে যে মহাপরিকল্পনা নিয়ে সরকার অগ্রসর হচ্ছে তার অপরিহার্য পরিণতি- নিয়মিতভাবে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি।

পশ্চাৎমুখি, ব্যয়বহুল, পরিবেশধ্বংসী, বিদেশি কোম্পানিমুখি এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার সফল হতে থাকলে শুধু দ্রব্যমূল্য, উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধিতে মানুষের ভোগান্তি বাড়বে তাই নয় দেশ আরও বড় বিপদের সম্মুখিন হবে। ঠিক এই সময়ে দেশ নিপীড়িত রোহিঙ্গা মানুষের অবিরাম প্রবাহে বিপর্যস্ত। কিন্তু সরকারের সুন্দরবিনাশী রামপাল প্রকল্প, দেশবিনাশী রূপপুর প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এর চাইতে বহুগুণ বেশি মানুষ দেশের ভেতরেই উদ্বাস্তু হবে। এর পরিণতি চিন্তা করাও কঠিন।

আমরা যখন বঙ্গোপসাগরের গ্যাস নিয়ে রপ্তানিমুখি চুক্তির বিরোধিতা করি তখন সরকারের মন্ত্রী মিয়ানমারের তুলনা টানেন। গ্যাস তেল প্রচুর রপ্তানিসহ যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত আর রাশিয়ার সাথে মিলে দেশের ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর স্বার্থে উন্নয়ন মডেল সাজালে পরিণতি কী হয় বিপুল সম্পদ থাকা সত্ত্বেও মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি তার প্রমাণ। আমরা বলি, বাংলাদেশ নাইজেরিয়া হবে না, মিয়ানমারও হবে না।”