চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বাংলাদেশের সামনে কঠিন পরীক্ষা

প্রথম ওভারে নিজের বলে ফিরতি ক্যাচ মিস করলেও লঙ্কান ইনিংসের শেষ ওভারে দুটি উইকেট তুলে নিলেন মাশরাফি। দুই পেরেরা- খিসারা ও দিলুরুয়ানের গড়ে ওঠা অসাধারণ জুটিটি ভাঙ্গলেন। তারপরও বড় সংগ্রহ গড়া থেকে বিরত রাখা গেল না শ্রীলঙ্কাকে। ম্যাচের সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টাইগারদের জন্য চ্যালেঞ্জটা কঠিন করে তুললেন স্বাগতিকরা। কলম্বোতে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮০ রান লঙ্কানদের। বাংলাদেশের সামনে ২৮১ রানের কঠিন চ্যালেঞ্জ।

অধিনায়ক মাশরাফি গুনারত্নকে (৩৪) রানে মাহমুদউল্লাহর তালুবন্দি করার পরের ওভারে মোস্তাফিজ সেক্কুগে প্রসন্নকে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাহঘরে ফিরিয়েছিলেন ২৩০ রানের সময়। তখন অল আউটের শঙ্কায়ই পড়ে লঙ্কানরা। কিন্তু থিসারা পেরেরা ৪০ বলে চারটি বাউন্ডারি ও একটি ছয়ে ৫২ রানের ক্যামিও খেলে হিসাব পাল্টে দেন। থিসারা পেরেরা ও দিলুয়ান পেরেরার ৩১ বলে ৪৫ রানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে লড়াকু পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা।

টাইগার বোলারদের পক্ষে তিনটি উইকেট নেন মাশরাফি মুর্তজা। মোস্তাফিজ দুটি ও মেহেদী মিরাজ এবং তাসকিন আহমেদ একটি করে উইকেট নেন।

এর আগে চান্দিমালের ফিরে যাওয়ার পর আরেকটি রান আউটের ধাক্কায় পড়ে শ্রীলঙ্কা। বোলার সাকিব, ৩১ ওভারের তৃতীয় বলে অন্যপ্রান্তের ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের খড়গে পড়েন সিরিবর্ধনে (১২)। পয়েন্ট থেকে বদলি খেলোয়াড় শুভাগত হোমের দ্রুত থ্রো থেকে সহজেই স্টাম্প ভেঙ্গে দেন মুশফিক। পরে ফিফটি করা কুশাল মেন্ডিসকে মুশফিকের গ্লাভসে জমা করান মোস্তাফিজ।

তার আগে সৌভাগ্যের রান আউটে দিনেশ চান্দিমাল ও কুশাল মেন্ডিসের ৪৯ রানের জুটি ভাঙ্গে। ৮৭ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বড় জুটির সন্ধান করছিল লঙ্কানরা। দলকে এগিয়ে নেওয়ার কাজটি করছিলেন চান্দিমাল-মেন্ডিস। তাদের ৭৩ বলে ৪৯ রানের জুটি টাইগারদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সাকিবের করা ২৬তম ওভারে শেষ বলে ডিপ পয়েন্টে বল পাঠিয়ে এক রান বের করতে চেয়েছিলেন মেন্ডিস। কিন্তু সেখান থেকে তাসকিনের অসাধারণ এক থ্রো মুশফিকের হাতে জমা পড়লে অনেকটা অলসভাবেই স্টাম্প ভেঙ্গেছিলেন তিনি। ব্যাটসম্যান চান্দিমালও ততক্ষণে ক্রিজে পৌঁছে গেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি। নিরাপদ স্থানে ফিরলেও অলস ভঙ্গির কারণে তার পা ও ব্যাট মাটি থেকে সামান্য ওপরে ছিল। ফলাফল, রান আউটে সাজঘরে হাঁটা দিতে হয়। থার্ড আম্পায়ার ভিডিও রিপ্লেতে দেখেন চান্দিমালের এই আলসে ভঙ্গি। পরে ভারতীয় আম্পায়ার এস রবি কয়েক আঙ্গিকে রিপ্লে দেখে আউটের সিদ্ধান্ত দেন। চান্দিমাল থামেন ২১ রানে।

সকালে লঙ্কানরা যখন রানের গতি বাড়িয়ে ছুটলেন, তখন প্রয়োজনের মুহূর্তে প্রথম আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অন্যপ্রান্ত দিয়ে বোলিংয়ে থাকা তাসকিন তুলে নেন নিজের প্রথম সাফল্য। দুই ধাক্কার সঙ্গে স্বাগতিকদের রানের চাকাতেও লাগাম দেওয়ার চেষ্টা চলে।

কলম্বোয় নিজের তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে অধিনায়ক থারাঙ্গাকে (৩৫) বোল্ড করেন তাসকিন। তার পেসে পরাস্ত থারাঙ্গার ব্যাট-প্যাড ফাঁকি দিয়ে বল স্টাম্প ভেঙ্গে দেয়।

শুরুতে প্রথম দুই ম্যাচের মত আগেভাগেই উইকেট এনে দেওয়ার কাছাকাছি পৌঁছেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ৫ রানে গুনাথিলাকার ফিরতি ক্যাচটি ফলো-থ্রুতে তালুতে জমাতে পারেননি অধিনায়ক। সাফল্য মেলেনি বাংলাদেশেরও। পরে হাত খুলে ব্যাট করেন দুই শ্রীলঙ্কান উদ্বোধনী ধানুস্কা গুনাথিলাকা ও উপুল থারাঙ্গা। তখন দ্রুত ঘুরছিল স্বাগতিকদের রানের চাকা।

দুটি ওয়াইডে শুরু করেছিলেন মাশরাফি। প্রথম ওভারে আসে ৮ রান। আরেক প্রান্তে সিরিজে প্রথমবার নতুন বলে শুরু করেছেন মোস্তাফিজ। তার প্রথম ওভারে এসেছে দুটি চার! পরে মাশরাফিকে উড়িয়ে মেরেছেন থারাঙ্গা। মোস্তাফিজকে এক ওভারে তিন চার। তারপরই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা আরেক ওপেনার গুনাথিলাকাকে ব্যক্তিগত ৩৪ রানে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানিয়েছেন মিরাজ।

সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে শুরুটা ছিল অদ্ভুতুড়ে। ম্যাচ শুরুর কথা ছিল বাংলাদেশ সময় সকাল দশ’টায়, সেটি পিছিয়ে করা হয় সাড়ে দশ’টায়। শনিবার অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে নেমেছে টাইগাররা।