চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বন্দর নগরীতে প্লাবন, বাণিজ্যে অশনি সংকেত

ভারী বৃষ্টি হলেই চট্টগ্রাম নগরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। বৃষ্টির সঙ্গে যোগ হয় কর্ণফুলী নদীর জোয়ারের পানি। পানিবন্দী হয়ে পড়ে নগরের কয়েক লাখ মানুষ। ডুবে যায় নগরের প্রধান সড়ক, অলিগলি, ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। কোথাও হাঁটুজল, কোথাও বা কোমরপানি। এতে কয়েক দিন পরপরই চরম দুর্ভোগে পড়ে নগরবাসী। নগরের কোথাও কোথাও হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি জমে। গত তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে এবার চট্টগ্রামে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। শুধু নগরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলো নয়, এবার গোটা চট্টগ্রাম শহর তলিয়ে গেছে ভারি বর্ষণ এবং বঙ্গোপসাগরের প্রবল জোয়ারের কারণে। ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বলছেন, নগরীর ৩৭টি খাল সংস্কার, পরিকল্পিত স্লুইস গেইট নির্মাণ এবং কর্ণফুলি নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিংসহ বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব। গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ এবং জোয়ারের কারণে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ, সিডিএ, হালিশহর, এক্সেস রোড, চকবাজার, মুরাদপুর, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ এবং বাকলিয়াসহ বেশিরভাগ এলাকা কোমর সমান পানিতে ডুবে যায়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় বেসরকারি মা ও শিশু হাসপাতালে পানি ঢুকে পড়ায় শত শত রোগী ভোগান্তিতে পড়েছেন। হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ার সঙ্গে যন্ত্রপাতি এবং আসবাবপত্রও নষ্ট হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের প্রাণকেন্দ্র খাতুনগঞ্জে পানি ঢুকে কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হয়েছে। মঙ্গলবার দায়িত্ব নেয়ার দু’বছর পূর্ণ হওয়ার আগের দিন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বলছেন, জলাবদ্ধতা থেকে নগরবাসীকে রক্ষায় বেশ কিছু পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর আগে চট্টগ্রামের মেয়র বলেছিলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে শুধু সিটি কর্পোরেশন একা কিছু করতে পারবে না, সরকারের উদ্যোগও প্রয়োজন। এখন বলছেন, ৩৭টি খাল সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলে জলাবদ্ধতা কমবে। সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর দায়িত্বহীনতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ। চট্টগ্রাম শহরের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরের মেয়র হয়ে তিনি নগরীর জলাবদ্ধতার দায় এড়াতে পরেন না। সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এখনই এই জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমাধান দিতে না পারলে অচিরেই চট্টগ্রাম শহর তার বাণিজ্যিক গুরুত্ব হারাতে শুরু হবে।