রউফ জালাল: মেলার নাম বউমেলা। মেলায় ক্রেতা শুধুই মহিলা। পুরুষদের বিষয়ে কঠোর বাধানিষেধ। ২২ বছর হলো পোড়াদহের মেলার পরদিন ওই স্থানে আয়োজন হয় মেলাটির। বিভিন্ন বয়সের হাজারো নারীর কেনাকাটায় মুখরিত ছিল আজ বৃহস্পতিবারের বউমেলা। মেলায় তৈজস পত্র থেকে কসমেটিক্স, অর্নামেন্ট আর শাড়ির দোকানের পসরা নিয়ে বসে ছিল বিক্রেতারা। তবে বেশিরভাগ বিক্রেতাই মহিলা।
সরেজমিনে মেলা ঘুরে দেখা যায়, মেলায় শুধু গ্রামীণ বধূরাই ছিলেন না, শহর থেকে পোড়াদহ মেলায় আসা তরুণীরাও ভিড় জমিয়েছিল মেলায়। শিশুদের আগমন ঘটে মেলায়। বউ মেলায় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্রেতা–বিক্রেতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে। কেউ বা কিনছেন চুড়ি, কেউবা কানের দুল, কসমেটিকস, কেউবা কিনছেন শিশুদের জন্য খেলনা। মেলা থেকে ব্যাগভর্তি করে কেউবা বাড়ি ফিরছেন, কেউবা দল বেধে মেলায় ছুটছেন। মেলার পদচারণা উপভোগ করার মত। মেয়েদের এই মেলায় মেলা কর্তৃপক্ষ কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা রেখেছে। পাশাপাশি আইন শৃংখলা বাহিনীও ছিল তৎপর।
মেলায় আগত পাশের গ্রাম রানীরপাড়ার মিতা খাতুন, শরীফা বেগম, স্নিগ্ধা খাতুন জানান, পছন্দের চুরি-ফিতাসহ নানা আইটেমের কসমেটিকস কিনলাম। পোড়াদহ মেলায় যেতে না পারলেও বউমেলায় এসেছি। প্রতি বছর বউমেলার এই দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকি। শুধু কেনাকাটা নয়, মেলা উপলক্ষে পুরানো বান্ধবীদের সাথে মেলায় দেখা হয়। একসাথে আড্ডাও দেই।
বউমেলায় আসা রূপসী খাতুন, নার্গিস বেগম ও সিফাত জানায়, পোড়াদহ মেলায় পুরুষদের উপচে পড়া ভীড় থাকার কারণে যেতে পারিনি। এজন্য বউমেলা এসেছি পছন্দের প্রসাধনী সামগ্রী কিনতে। বউমেলায় জিনিসপত্রের দাম ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যেই। প্রতি বছরই এই মেলায় জিনিসপত্রের দাম কম থাকে বলে ক্রেতারা মেলায় ভিড় জমায়।
বগুড়া শাহ সুলতান কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী মল্লিকা এসেছিলেন বউমেলায়। তিনি জানান, মেলাতে এসে নাগরদোলায় উঠেছি। আমার মত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেকেই এসেছে মেলায়। ওই এলাকার বাসিন্দা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তানিয়া জানান, বউমেলা মিস করার মতো না। ঈদের আনন্দের চেয়ে এই মেলার আনন্দ আমরা বেশি উপভোগ করি। তাই মেলা উপলক্ষে ছুটে এসেছি।
বউমেলা পরিচালনা কমিটির আহবায়ক জাহিদুল ইসলাম জানান, ২২ বছর হলো বুধবার পোড়াদহ মেলা শেষ হওয়ার পরদিন বৃহস্পতিবার মেলাটি হয়ে আসছে। বউমেলা, তাই মেয়েদের নিরাপত্তার বিষয়টি সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেয়া হয়।