চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ফেসবুকে আপত্তিকর কথায় জিজ্ঞাসাবাদ, ষড়যন্ত্র অভিযোগে মামলা

পরিবেশ কর্মী আব্দুল করিম কিমের নাম ও ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। ঘটনাটির সাথে কোন সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর কিমকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনার পর তথ্য প্রযুক্তি আইনে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন তিনি।

সিলেটটুডে২৪.কম জানায়, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ও সুরমা রিভার ওয়াটার কিপার আব্দুল করিম কিম পুলিশের পরামর্শে বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট মহানগরীর বিমানবন্দর থানায় মামলাটি করেছেন।

গতকাল বুধবার রাত ১টার দিকে নগরীর হাউজিং এস্টেটের বাসা থেকে কিমকে নিয়ে আসেন বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ফেসবুকে আব্দুল করিম কিমের নামে অবমাননকর বক্তব্য লেখা হয়েছে, পুলিশ সদরদপ্তর থেকে আসা এমন একটি অভিযোগের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাকে আনা হয়েছিলো। রাতে তাকে কতোয়ালি থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এসময় পুলিশ বুঝতে পারে, তাকে ফাঁসানোর জন্য অন্য কেউ এমন কাজ করতে পারে।

এ ঘটনায় কিম বাদী হয়ে অজ্ঞতানামাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন জানিয়ে মোশররফ বলেন, পুলিশ দোষীদের খোঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

আব্দুল করিম কিম জানান, বুধবার রাত ১টার দিকে এক পুলিশ সদস্য মোবাইল ফোনে তাকে বাসা থেকে বের হতে বলেন। নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকার বাসা থেকে বের হতেই তাকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য কতোয়ালি থানায় নিয়ে আসেন। থানায় আসার পর পুলিশ কর্মকর্তা একটি প্রিন্টেট কাগজ তার হাতে ধরিয়ে দেন, যাতে তার ফেসবুকের আইডি নাম ও প্রোফাইল ছবি যুক্ত এবং ধর্মীয় অবমাননাকর বক্তব্য সম্বলিত একটি স্ক্রিনশট রয়েছে।

এই স্ক্রিনশট ফেসবুকে বিভিন্ন উগ্রবাদী পেজে ব্যাপক প্রচার হচ্ছে জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা এবিষয়ে তার বক্তব্য জানতে চান। এসময় ফেসবুকে এমন কিছু লিখেননি বলে পুলিশকে জানান কিম। পরে পুলিশ সদস্যরা পাসওয়ার্ড নিয়ে তার ফেসবুক আইডি খুঁজেও ধর্মীয় অবমাননকার কিছু পাননি।

এরপর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিনভর এনিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন মহানগর পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পুলিশ সদর দপ্তরের সাথেও এনিয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করেন তারা। কিমকে ছাড়া- না ছাড়া নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যেই মতপার্থক্য দেখা দেয়। পরে বিকাল ৪ টার দিকে থানা চত্বর থেকে বেরিয়ে আসেন কিম।

এরপর রাতে বিমানবন্দর থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করেন কিম। মামলার এজাহারে কিম অভিযোগ করেন, ‘ফেসবুকে আমার প্রোফাইল ছবি ব্যবহার করে অজ্ঞতানামা কে বা কারা ধর্ম অবমাননকার বক্তব্য প্রচার করে আমাকে ফাঁসানোর গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে।’

এজাহারে তিনি লিখেন, ‘গত ১২ ডিসেম্বর আমার বড় বোন আছমা বেগমের ফেসবুকে Gurolrb Bacchu নামের একাউন্ট থেকে একই ধরণের ধর্মীয় অবমাননকার স্ক্রিনশট প্রদান করা হয়।’

ফেসবুকে Gurolrb Bacchu নামের এই আইডিতে গিয়ে দেখা যায়, কিমের নাম ব্যবহার করে দেওয়া ওই অবমাননকার স্ক্রিনশটটি এই আইডি থেকে শেয়ার করা হয়েছে। যাতে অনেকে কিমকে হত্যারও হুমকি প্রদান করছেন।

এ ব্যাপারে কতোয়ালি থানার সহকারী কমিশনার নুরুল হুদা আশরাফী বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কিমকে ডেকে আনা হয়েছিলো। তাকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকেলে তিনি চলে গেছেন।

আব্দুল করিম কিম বলেন, আমি পরিবেশ রক্ষাসহ বিভিন্ন নাগরিক আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত। আমার কর্মকান্ডে সংক্ষুব্ধ কেউ আমাকে ফাঁসানোর জন্য এমন কাজ করতে পারে।