অলিম্পিক ফুটবলের স্বর্ণ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হলো পাঁচবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের। রিও অলিম্পিকে ছেলেদের ফুটবলের ফাইনালে ব্রাজিল টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে জার্মানিকে হারিয়ে স্বর্ণ জিতেছে স্বাগতিকরা।
মারাকানা স্টেডিয়ামে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এক ফাইনালে নির্ধারিত ৯০ ও অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের ১-১ এ ড্র হওয়ার পর খেলা গড়ায় ভাগ্য পরীক্ষার নামক টাইব্রেকারে । আর তাতেই বাজিমাত সাম্বার রাজাদের।
টাইব্রকারের শেষ শটটি নেইমার নিতে আসতেই মারাকানার গ্যালারি জুড়ে নীরবতা। উদযাপনের প্রস্তুতি। ব্রাজিল অধিনায়কের শটটি জার্মান গোলকিপার হর্নকে পরাস্ত করতেই সেলেসাওদের সাফল্যের মুকুটে আরো একটি পালক।
বিশ্বকাপ,কোপা আমেরিকা,কনফেডারেশন্স কাপের পর অলিম্পিকের সোনার হরিণও বশ মানলো।
ম্যাচের নায়ক নেইমারের আনন্দাশ্রু’তে ভেসে গেল দু’বছর আগে বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে শোচনীয় হারের দু:সহ স্মৃতি। ১৯৫০’র এই মারাকানায়ই বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের বেদনাও হারিয়ে গেলো স্বর্ণ জয়ের উল্লাসে।
জয়ের পটভূমি রচনা হয় টাইব্রেকারে দুই দলই প্রথম চারটি করে নেয়া শটে সাফল্য পাওয়ার পর। নিল পিটারসেনের নেয়া জার্মানির পঞ্চম শটটি ব্রাজিলের গোলকিপার ওয়েভারটন আটকে দিতেই পেলে, জিকো,রোনাল্ডো,রোনালদিনিয়োর উত্তরসূরীদের হাতের নাগালে চলে আসে অলিম্পিক স্বর্ণ পদক। নেইমারের শিল্পিত শটে জয়ের আনুষ্ঠানিকতাই সম্পন্ন হয়।
ম্যাচের শুরু থেকে অবশ্য জার্মানরাই এগিয়ে ছিলো আক্রমণে । ১০ মিনিটে জুলিয়ান ব্র্যান্ডেথ’র শট ব্রাজিলের বারে লেগে ফিরে আসে।
নেইমার নির্ভর ব্রাজিলীয় আক্রমণ ঠেকাতে জার্মানরা চড়াও হয়েছিলো নেইমারের শরীরের উপর। তাতেই সর্বনাশ। ২৬ মিনিটে এরকমই একটি ফাউলে জার্মানীর ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেইমারের চোখ জুড়ানো ফ্রিকিক ব্রাজিল জুড়ে উল্লাসের ঢেউ উঠিয়ে দেয়।
গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়া জার্মানরা দমেনি তাতে। ৫৮ মিনিটে টলইয়ানের ক্রসে জার্মান ক্যাপ্টেন ম্যাক্স মেয়ারের নিখুঁত ফিনিশিং ম্যাচে সমতা ফেরায়।
এরপর দু’দলের আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে দারুণ জমে উঠে ম্যাচ। কিন্তু নির্ধারিত ৯০ কিংবা অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে আর গোল হয়নি। পরিণতিতে খেল গড়ায় টাইব্রেকারে। তাতে চারবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন জার্মানির অলিম্পিক স্বর্ণের অপেক্ষা বেড়েছে। ২০১৪’র বিশ্বকাপের সেমি’তে জার্মানদের হাতে নাকাল হওয়ার প্রতিশোধ নিতে পেরেছে নেইমার ও তার সঙ্গীরা।