পিইসি, জেএসসি পরীক্ষার পর চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের মধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ঘোষণা দিয়েছেন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসকারীকে ধরিয়ে দিতে পারলে পাঁচ লাখ টাকা পুরষ্কার দেওয়া হবে।
রোববার সচিবালয়ে এক জরুরি সভার পর শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এই যে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করার যারা হোতা, যারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সে ধরনের যারা অপরাধী তাদেরকে ধরিয়ে দিতে পারলে, চিহ্নিত করে দিতে পারলে, সঠিক প্রমাণিত হলে ৫ লাখ টাকা পুরষ্কার দেওয়া হবে।”
চলমান এসএসসি ও সমমানের বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে করণীয় নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন, “পরীক্ষার সময় যেসব প্রশ্ন ওঠেছে যে (প্রশ্ন) ফাঁস হয়েছে সেটা ঠিক বা ভুল এসব বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করে এবং তার ফলে পরীক্ষার্থীদের উপর কী প্রভাব পড়েছে, কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছ কী হয় নাই, এসব মিলিয়ে পরীক্ষাটাকে কীভাবে মূল্যায়ন করা যায় সেটা মূল্যায়ন করে পরীক্ষা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সুপারিশ করবেন, এজন্য একটি কমিটি আমরা করে দিচ্ছি।”
এই কমিটি এসএসসি ও সমমানের পুরো পরীক্ষা ‘মনিটর’ করবেন বলে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কমিটি প্রয়োজন মনে করলে আরও সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন।
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশের দুই জন, শিক্ষা বোর্ডের তিনজন এবং বিটিআরসির একজন প্রতিনিধি থাকছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের একজন কর্মকর্তা সদস্য সচিব হিসেবে কমিটিতে থাকবেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এসএসসির বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে উত্তরসহ প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষার পর দেখা যায় মূল প্রশ্নের সঙ্গে হবুহু মিল রয়েছে ওই ফাঁস প্রশ্নের।
সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সভার শুরুতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন ফেইসবুকে আসল বা নকল যে কোনো ধরণের প্রশ্নপত্র নিয়ে পোস্ট দেওয়ায় সঙ্গে জড়িতকে ধরিয়ে দিলে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন।
নাহিদ বলেন, পরীক্ষার হলে কোনো শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা যে কাজেই যান না কেন কেউ কোনো ধরনের ফোন সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবেন না।
“যদি কারও কাছে ফোন পাওয়া যায় সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। কোনো পরীক্ষার্থীর কাছে পাওয়া গেলে তার পরীক্ষা বাতিল হয়ে যাবে এবং মামলা হবে।”
পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষার হলে গিয়ে সিটে গিয়ে বসার বাধ্যবাধকতার কথা আবারও স্মরণ করিয়ে দেন শিক্ষামন্ত্রী।