রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছ থেকে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সম্পর্কে ১১টি গুরুতর অভিযোগের দালিলিক তথ্য জানার পর তার সঙ্গে একই বেঞ্চে বিচারকাজ পরিচালনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন আপিল বিভাগের অন্য পাঁচ বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ১১ অভিযোগের মধ্যে আছে: বিদেশে অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি এবং নৈতিক স্খলন।
হাইকোর্ট বিভাগের দুই বিচারপতি প্রতিনিধিসহ আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির দীর্ঘ বৈঠকের পর সুপ্রিম কোর্ট যে বিবৃতি দিয়েছে তাতে বলা হয়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ছাড়া আপিল বিভাগের অন্য পাঁচ বিচারপতিকে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানান। বিদেশে থাকায় মোঃ ইমান আলী ছাড়া আপিল বিভাগের চার বিচারপতি-আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এবং মির্জা হোসেইন হায়দার বৈঠকে যোগ দেন।
আলোচনার এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে ১১টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সম্বলিত দালিলিক তথ্য উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের পর বিচারপতি মোঃ ইমান আলী দেশে ফিরে আসার পর ১ অক্টোবর আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতি বৈঠকে মিলিত হন এবং প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যে ১১টি অভিযোগ সেগুলো বিশদভাবে পর্যালোচনা করেন। সিদ্ধান্ত হয় যে, গুরুতর অভিযোগগুলোর বিষয়ে প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করা হবে। তিনি যদি ওই অভিযোগগুলোর বিষয়ে সন্তোষজনক জবাব বা সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন তাহলে তার সঙ্গে বিচারালয়ে বসে বিচারকার্য পরিচালনা সম্ভব হবে না।
ওইদিনই বেলা ১১:৩০টার দিকে প্রধান বিচারপতির অনুমতি নিয়ে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার হেয়ার রোডের বাসায় দেখা করে অভিযোগগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। সুপ্রিম কোর্টের বিবৃতি অনুযায়ী, দীর্ঘ আলোচনার পরও প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি কোন গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা বা সদুত্তর পাননি। তখন তারা জানিয়ে দেন, অভিযোগগুলোর বিষয়ে সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে একই বেঞ্চে বসে তাদের পক্ষে বিচারকাজ পরিচালনা সম্ভব হবে না।
প্রধান বিচারপতি তখন সুস্পষ্টভাবে বলেন, সেক্ষেত্রে তিনি পদত্যাগ করবেন। তবে, এ ব্যাপারে পরদিন (২ অক্টোবর) তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। বিৃবতিতে বলা হয়, আপিল বিভাগের বিচারপতিদেরকে পরদিন কিছু না জানিয়ে প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির কাছে ১ মাসের ছুটির আবেদন করলে রাষ্ট্রপতি তা অনুমোদন করেন।