বাঙালির দুয়ারে আরেকটি বসন্ত। নানা কারণে বসন্ত বাংলার তথা বাংলাদেশের মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এ ঋতু বাঙালির উৎসব ও মিলনের বার্তা বয়ে আনে। রাজনৈতিক ও জাতীয় ক্ষেত্রেও বসন্তের রয়েছে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। এই বসন্তেই শুরু হয়েছিল ভাষা আন্দোলন, যার পথ ধরে স্বাধীন বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়েছিল বাঙালির মনে। কালের পরিক্রমায় এই বসন্তেই শুরু হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধ। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই বসন্তেই বঙ্গবন্ধুকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্ত করা হয়েছিল। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে বনে বাদাড়ে গাছেগাছে কচিপাতার নাচনের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালির মনে ধরে আলোর নাচন। বসন্তের আগমনবার্তার সঙ্গে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো, একুশে ফেব্রুয়ারি’ এবং প্রাণের মেলা একুশের বইমেলা নাগরিক জীবন রাঙিয়ে দেয়। বাসন্তী রংয়ের ছোঁয়ায় রাজধানীর রাজপথ, পার্ক, বইমেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরসহ পুরো নগরী সুশোভিত হয়। বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করার রীতি চালু হয়েছে দেশে। জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ বসন্ত উৎসব আয়োজন করে আসছে। এবারের বসন্ত বিভিন্ন কারণে জাতীয় জীবনে আরও উজ্জ্বল। দুর্নীতি দমন কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের নতুন নেতৃত্ব কিছুদিন হলো নির্বাচিত হয়েছে। জাতীয় জীবনে সম্ভাব্য ভাল কিছু করার প্রত্যয়ে তারা নানা কর্মসূচি দিয়ে নাগরিক অধিকার ও রাজনীতিতে গতিশীলতা নিয়ে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই ফাল্গুন জাতীয় জীবনেও ইতিবাচক পরিবর্তন বয়ে আনবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।