গত শতকের আশির দশকে আফগানিস্তানের ভূমি থেকে সোভিয়েত বাহিনীকে হটানোর জন্য তালেবানদের উত্থান ঘটে। বলা হয় সোভিয়েত বাহিনীর বিপক্ষে মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায় এ গোষ্ঠীর উত্থান। সময়ের ব্যবধানে পাশার দান উল্টে গেছে। মার্কিন বাহিনীর শত্রু হয়েছে তালেবানরা। তাদের দমনে আফগানিস্তানে অভিযান পরিচালনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এবার তালেবানদের এক সময়ের চরম শত্রু সোভিয়েত উত্তরসূরী রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাদের সহায়তা করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ তুলেছেন ন্যাটো জোটের সুপ্রিম কমান্ডার হিসেবে ইউরোপে দায়িত্বরত মার্কিন সেনাবাহিনীর জেনারেল কার্টিস স্কাপারত্তি।
তার মতে, তালেবানরা আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে শক্তি বৃদ্ধি করছে। আর এর পেছনে সম্ভবত মস্কোর সহায়তা ভূমিকা রাখছে।
বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেটের আর্মড সার্ভিসের কমিটির শুনানিতে কার্টিস বলেন, ‘আমি আফগানিস্তানে রাশিয়ার প্রভাব দেখেছি। তালেবানদের সঙ্গে সম্ভবত রাশিয়া সহযোগিতা বৃদ্ধি করেছে। এমনকি তারা তালেবান সদস্যদের রসদ সরবরাহ করেছে।’
তবে তালেবানের শক্তি বৃদ্ধিতে এক সময়ের শত্রু রাশিয়া কেমন ভূমিকা রাখছে কিংবা কি ধরণের রসদ সরবরাহ করেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করেননি তিনি।
তবে মার্কিন জেনারেলের এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ক্রেমলিন। রুশ প্রশাসনের দাবি, তালেবানকে রসদ সরবরাহ কিংবা তাদের শক্তি বৃদ্ধি নয় বরং তাদের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে রাশিয়া।
একসময় পুরো আফগানিস্তান তালেবানদের দখলে ছিল। মার্কিন অভিযানের মুখে এখন দেশটির প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি এলাকা তাদের হাতছাড়া হয়েছে। দেশটির প্রায় অর্ধেকটাই তালেবানসহ বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনীর দখলে রয়েছে। এসব এলাকায় লড়াই চলছে।
তালেবান ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, ২০০৭ সাল থেকে রুশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার বিষয়টি তালেবানের পক্ষ থেকেও স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। তবে রসদ প্রাপ্তি নয় বরং এ সম্পর্ক ‘নৈতিক ও রাজনৈতিক সমর্থনের’ বেশি কিছু নয়।
এদিকে, তালেবালেন ও আফগানিস্তানের সঙ্গে আলোচনার স্বাগতিক দেশ হবে পাকিস্তান। এতে তালেবানের সাতজন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করবে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, চীন, রাশিয়া ও মার্কিন প্রতিনিধির সদস্যরা। এছাড়া আগামী মাসে রাশিয়া অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা শুক্রবারই আনুষ্ঠিনকভাবে ঘােষণা করেছে পাকিস্তান।