চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

পাকিস্তানে কন্যাকে পুড়িয়ে মারা নারীর মৃত্যুদণ্ড

‘অনার কিলিং’য়ের নামে কন্যা সন্তানকে পুড়িয়ে মারা মাকে ফাঁসি দিয়েছে পাকিস্তানের একটি আদালত। ১৮ বছর বয়সী মেয়ে জিনাত রফিকের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন তারই মা পারভিন বিবি। লাহোরের নিজ ঘরে খাটের সঙ্গে বেঁধে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিলেন তিনি। এই কাজে সহায়তার অভিযোগে নিহতের মা আনিস রফিককে যাবজ্জ্বীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। সোমবার লাহোরের একটি আদালত এই রায় দেন।

পরিবারের অমতে মোটরসাইকেল মেকানিক হাসান খানকে গত বছরের জুন মাসে বিয়ে করেছিলেন জিনাত। বিয়ের এক সপ্তাহ পরেই ৮ জুন মর্মান্তিক মৃত্যু বরণ করে নিতে হয় তাকে। এই হত্যার পর রাস্তায় নেমে আসেন পারভিন। আর প্রতিবেশীদের উদ্দেশ্যে বুক চাপরিয়ে দম্ভ নিয়ে বলতে থাকেন ‘পরিবারের সুনাম নষ্ট করায় আমি তাকে হত্যা করেছি’।

জিনাত-হাসানের মধ্যে জাতিগত বৈষম্য থাকায় তা মানতে শুরু থেকেই অস্বীকৃতি জানায় এই পরিবার। হাসান ছিলেন পশতুন আর জিনাত পাঞ্জাবি।

হাসান জিও নিউজকে গত বছর জানিয়েছিলেন, যেদিন আমরা পালিয়ে গিয়েছিলাম সেদিনও পরিবারের হাতে নির্যাতিত হয়েছিলেন জিনাত। তার নাক-ঠোঁট দিয়ে রক্ত পড়ছিলো। তখন সে বিয়ে করে পালিয়ে যেতে চায়। পালিয়ে বিয়ের চারদিন পর জিনাতের পরিবার ফোন করে তাকে ফিরে আসতে বলে। আটদিন পরে বিয়ের অনুষ্ঠান করবে এবং কোন ক্ষতি করা হবে না বলে আশ্বস্ত করে তারা।

জিনাত রফিক

“কিন্তু ফিরে যাওয়ার দুদিন পর জিনাত জানায় তার পরিবার কথার বরখেলাপ করছে। আমাকে বলে তাকে নিয়ে যেতে। কিন্তু পরিবারের অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে আমি তাকে ৮ দিন অপেক্ষা করতে বলি। কিন্তু এরপরই তাকে হত্যা করা হয়।”

হাসান খানকে সান্ত্বনা দিচ্ছে পরিবার

পাকিস্তানের স্বাধীন মানবাধিকার কমিশনের মতে, দেশটি নারীর প্রতি সহিংসতা ক্রমেই বাড়ছে। গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সাল জুড়ে ১ হাজার ১০০-রও বেশি ‘অনার কিলিং’ হয়েছে। এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আক্রান্ত হন নারীরা। অনার কিলিংয়ের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সংসদে সম্প্রতি একটি আইন পাশ করে। আগে পরিবারের সদস্যদের কাছে ক্ষমা চেয়ে শাস্তি থেকে রেহাই পেলেও, নতুন আইনে স্বজনেরা মৃত্যদণ্ড থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষমতা রাখলেও অপরাধীকে অবশ্যই যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করতে হবে।